ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, ‘পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের (পিওকে) মানুষ ভারতের অংশ হতে চাইছে। আমরাও এ ব্যাপারে আশাবাদী যে, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে।’
সম্প্রতি ‘ইন্ডিয়া টিভি’র ‘আপ কি আদালত’ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রাজনাথ। সেখানেই তিনি জানান যে, ভারত পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে দখল না করলেও, সেখানকার পরিস্থিতির জন্য এলাকাটি ভারতের সঙ্গে জুড়ে যাবে। অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের কাশ্মীর সংক্রান্ত সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে রাজনাথকে প্রশ্ন করা হয়। প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “ওরা কখনও কাশ্মীর দখল করতে পারবে? পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে ওদের ভয় পাওয়া উচিত।” তার পরই তাঁর সংযোজন, “আমি দেড় বছর আগেই বলেছিলাম, আমাদের পাক অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা চালানো বা সেটি দখল করার কোনও প্রয়োজন নেই। কিন্তু ওখানে এমন পরিস্থিতি যে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষেরাই ভারতের সঙ্গে জুড়ে যেতে চাইছেন।”
পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে রাজনাথ বলেন, “আমরা কখনও অন্য দেশকে আক্রমণ করতে যাই না। ভারতের চরিত্র এটাই যে, তারা কখনও বিশ্বে কোনও দেশকে আক্রমণ করে না, তাদের কারও এক ইঞ্চি জমিও দখল করে না। কিন্তু পাক অধিকৃত কাশ্মীর আমাদের। আমি আত্মবিশ্বাসী যে, পাক অধিকৃত কাশ্মীর ভারতের সঙ্গে মিশে যাবে।”
চীন ভারতে হামলা করবে কিনা, জানতে চাইলে রাজনাথ বলেন, ‘এমন ভুল না করার বোধটা স্রষ্টা তাদের দিক। ভারত কোনো দেশে হামলা করে না। তবে কোনো দেশ হামলা চালালে আমরা বসে থাকব না। তবে আসল সত্য হলো প্রতিবেশীদের সঙ্গে আমাদের ভাল সম্পর্ক রয়েছে।’
ভারতে থাকা কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে দিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট কেন্দ্রীয় সরকার সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করেছিল। গত বছর ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ রায় দেয়, কেন্দ্রীয় সরকারের ৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক নয়। সঙ্গে এও ঘোষণা করা হয়েছিল, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচন করাতে হবে। চলতি বছরে লোকসভা নির্বাচনের আগেই বিধানসভা নির্বাচনের দাবি করেছিল বিরোধীরা। কিন্তু শেষমেশ তার ঘোষণা করা হয়নি।২০১৪ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল। এক দশক পেরিয়েও বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা না হওয়ায় ইতিমধ্যেই বিরোধীরা সমালোচনা করেছেন।এই অবস্থায় ভোটের মুখে এই মন্তব্যকে ‘স্বপ্ন ফেরি’ বলেই মনে করছে রাজনৌতিক মহলের একাংশ।