শুক্রবার ছিল আইআইটি মাদ্রাজের (IIT Madras) ৬১তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান। মঞ্চে পুরস্কার নিতে উঠে ফিলিস্তিনে নির্বিচার গণহত্যার প্রতিবাদ জানালেন এক ছাত্র। পুরস্কার-গ্রহণ বক্তৃতায় গণহত্যায় মদত দেওয়ার জন্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলিকেও দুষলেন ওই মেধাবী ছাত্র।
তরুণ ছাত্রটির নাম ধনঞ্জয় বালকৃষ্ণন। চলতি শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে পাঠ্যক্রমিক ও পাঠ্যক্রম বহির্ভূত সব ক্ষেত্র মিলিয়ে সেরার শিরোপা পেয়েছেন তিনি। ধনঞ্জয় আইআইটি মাদ্রাজের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র। শুক্রবার প্রতিষ্ঠানের ৬১তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে নোবেলজয়ী ব্রায়ান কোবিলকার হাত থেকে ‘গভর্নর পুরস্কার’ নিতে মঞ্চে ওঠেন তিনি। পুরস্কার গ্রহণের সময় ধনঞ্জয় বলেন, ‘‘এই মঞ্চে কিছু কথা বলার সুযোগ পেয়েও যদি এই সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে কথা না বলি, তা হলে নিজের সঙ্গে অন্যায় করা হবে। প্যালেস্টাইনে গণহত্যা চলছে। মারা যাচ্ছেন অগণিত মানুষ। এই মৃত্যুমিছিলের কোনও শেষ দেখতে পাচ্ছি না।…এখন প্রশ্ন উঠতে পারে এ সব নিয়ে আমরা কেন ভাবব? ভাবব কারণ, ইতিহাসে এসটিইএম (অর্থাৎ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও গণিত) বারবার ইজরায়েলের মত সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলির সঙ্গে হাত মিলিয়ে এসেছে।’’
ধনঞ্জয় বলে চলেন, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রেরা সাধারণত বড় বড় প্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করার সুযোগ পাওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন। অথচ এই সব সংস্থা বেশির ভাগই প্যালেস্টাইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত। এদের কেউ কেউ ইজ়রায়েলের মতো দেশগুলিকে নির্বিচারে মানুষ মারার জন্য ব্যবহৃত প্রযুক্তি সরবরাহ করেন। তা হলে এর সমাধান কী? ‘‘…আছে,’’ বলছেন ধনঞ্জয়। ‘‘আমার কাছে সব উত্তর নেই, তবে এই উত্তরটুকু আমি জানি। বাস্তব জগতই ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মক্ষেত্র। তাই আমরা কী করছি, কেন করছি, সেই কাজের পরিণতি কী, সে সব নিয়ে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। ক্ষমতার ভারসাম্যহীন এই জটিল ব্যবস্থায় নিজেদের অবস্থান বেছে নিতে হবে নিজেদেরই।’’
“Inaction is complicity,” Dhananjay Balakrishnan, a graduate of Indian Institute of Technology Madras (IIT-M), in his Governor’s Prize acceptance speech during the convocation, called for action against the ongoing genocidal war by #Israel on #Palestine.#IITMadras pic.twitter.com/9BLQENhPqk
— Hate Detector 🔍 (@HateDetectors) July 19, 2024
শুধু তা-ই নয়, জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ ও শ্রেণিপরিচয়ের ভিত্তিতে শোষণ বন্ধ করারও আর্জি জানিয়েছেন ওই ছাত্র। বলেছেন, মানুষ খুন করার জন্য নয়, মানুষের দুঃখ দূর করার জন্য পড়ো!
আইআইটি মাদ্রাজ দেশের প্রথম সারিতে থাকা আইআইটিগুলির মধ্যে একটি। প্রতি বছর নানা রাজ্য থেকে মেধাবী ছাত্রেরা সেখানে পড়তে যান। এ হেন প্রতিষ্ঠানের কৃতি ছাত্রের বার্তায় নড়ে চড়ে বসেছে দেশের সাধারণ মানুষ। কারও মুখে প্রশংসার সুর, আবার কেউ মেতেছেন সমালোচনায়।