পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক অবস্থান ভালো নয়। কতদিন তিনি ক্ষমতায় থাকবেন, তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে, ইমরানকে হত্যার ছক কষছে কেউ বা কারা। ইমরানের তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতা ফয়জল ভাওড়া এমনটাই দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর প্রাণসংশয় রয়েছে। পাক সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানিয়েছেন, বুলেটপ্রুফ কাঁচ ব্যবহার করে জনসভা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ইমরান খানকে। কিন্তু ইমরান খান বলেছেন, আল্লার ইচ্ছা হলে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবেন তিনি।
গত রবিবার ইসলামাবাদের জনসভায় পাক প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, চিঠি দিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে তাঁদের। এই প্রসঙ্গে ইমরান বলেছেন, ‘অনাস্থা প্রস্তাব তো একটা বৈধ সাংবিধানিক প্রক্রিয়া। এখানে যা হচ্ছে, সেটা হল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদেশ থেকে আমদানি করা সঙ্কট। আমি এবার শরিক দলগুলিকে ওই নথি (চিঠি) দেখাব। সিনিয়র সাংবাদিকদেরও দেখাব।’ পাক সরকারের ইউক্রেন–নীতি এবং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ওই দেশটি নাকি অসন্তুষ্ট। কিন্তু সেটি কোন দেশ, তা খোলসা করেনি পাক সরকার।
আরও পড়ুন: Bangladesh: জাহাজের ধাক্কায় ডুবল লঞ্চ! ৬টি মৃতদেহ উদ্ধার, বহু নিখোঁজ
ইমরানের দাবি, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে অনাস্থা প্রস্তাব পেশের আগেই ওই চিঠিতে অনাস্থা প্রস্তাবের কথা বলা হয়েছিল। তবে কী ‘হুমকি’ দেওয়া হয়েছিল, তা বলেননি তিনি। তবে পিটিআইয়ের বর্ষীয়ান নেতা ফয়জল ভাওদার দাবি করেছেন, ইমরানের প্রাণ সংশয় হতে পারে। তাঁকে খুনের ছক কষা হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ যে ভিত্তিহীন। তা জানিয়েছে আমেরিকা। তাঁদের দাবি, ‘কোনও বিদেশি শক্তিই পাক সরকারকে সরাতে চাইছে না। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’
এদিকে, পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর ছিল, বুধবারই জরুরি অবস্থা জারি করার কথা ঘোষণা করতে পারেন পাক প্রধানমন্ত্রী। কারণ নিজের কুর্সি ছাড়তে রাজি নন ইমরান। পাকিস্তান সংসদে ইতিমধ্যেই সংখ্যালঘু হয়ে গিয়েছে ইমরান সরকার। ৩ এপ্রিল আস্থা ভোটের আগে কোনও বড় অঘটন না ঘটলে তাঁর সরকারের পতন নিশ্চিত বলেই মনে করা হচ্ছে। ৩৪২ আসনের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে আস্থা ভোটে জিততে হলে ইমরানের দরকার ১৭২টি ভোট। কিন্তু অঙ্ক বলছে, শাসক জোটের ঝুলিতে এখন রয়েছে মাত্র ১৬৪টি আসন। বিরোধীদের রয়েছে ১৭৬টি। বুধবার বিকেলেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল ইমরান খানের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই ভাষণ বাতিল করেন ইমরান।
উল্লেখ্য, বুধবার পাক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া। আইএসআইয়ের ডিজি নাদিম অঞ্জুমও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। জল্পনা ছিল, সেনাপ্রধান এবং আইএসআই প্রধানের সঙ্গে আলোচনার পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে ইস্তফার কথা ঘোষণা করবেন পাক প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তা ইমরান করেননি।
আরও পড়ুন: Russia-Ukraine War: কামাল করল তুরস্কই! সেনা অভিযান থেকে সরছে রাশিয়া