পকসো আইনে শারীরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সম্মতি দেওয়ার ন্যূনতম বয়স ১৮ থেকে ১৬ বছর করার প্রস্তাবে আপত্তি জানাল কেন্দ্রীয় আাইন কমিশন৷ এই সিদ্ধান্ত লাগু হলে তা বাল্য বিবাহ এবং শিশু পাচারের বিরুদ্ধে চলা লড়াইয়ের উপরে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও মত দিয়েছে কেন্দ্রীয় আইন কমিশন৷ নিজেদের মতামত কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েও দিয়েছে তারা৷তবে ঘটনা বিশেষে যথাযথ পদক্ষেপের জন্য আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা দরকার বলেও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় আইন কমিশন৷
দেশে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে অপ্রাপ্তবয়স্কের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় যৌন সম্মতির বয়সসীমা কমাতে ‘পকসো’ আইন সংশোধনের প্রস্তাব ভেবে দেখতে পরামর্শ দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। গত ডিসেম্বরে তিনি কেন্দ্রকে এব্যাপারে সংসদে বিল আনারও প্রস্তাব দেন। তারপরেই কেন্দ্র আইন কমিশনের মতামত চেয়ে পাঠায়। আইন কমিশন এব্যাপারে নিজেদের আপত্তির কথা জানিয়ে আইনমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট পেশ করেছে।
আইন কমিশন নিযুক্ত প্রাক্তন বিচারপতি রিতু রাজ অবস্তির নেতৃত্বাধীন প্যানেল ‘পকসো’ সংশোধনের প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে। কর্নাটক হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অবস্তি একথা জানিয়ে বলেন, আইনগতভাবে যৌন সম্মতির বয়স ১৮বছর থেকে কমিয়ে ১৬ করার প্রস্তাব নিয়ে আমরা বিভিন্ন মতামত গ্রহণ করেছি। তার ভিত্তিতে আমাদের বক্তব্য হলো, ‘পকসো’ আইন অনুসারে পরোক্ষে যৌন সম্মতির বয়স ১৮বছর থেকে কমিয়ে ১৬ করা উচিত হবে না। এক্ষেত্রে অনেক কিছু বিবেচনার প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষত যে ঘটনাগুলিতে না বুঝেই ১৬ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে শিশুরা শারীরিক সম্পর্কে সম্মতি দিয়ে ফেলে সেই সমস্ত ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে পদক্ষেপ করা যেতে পারে৷
আইন কমিশনের মতে, বহু ক্ষেত্রেই জোর করে অথবা ভুল বুঝিয়ে সম্মতি আদায় করা হয়৷ কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, নির্যাতনকারী নির্যাতিতা শিশুটির পরিচিত, এমন কি একই পরিবারের সদস্য৷ সেক্ষেত্রে সম্মতি দানের বয়সসীমা কমিয়ে দেওয়া হলে পকসো আইন তার কার্যকরিতা হারিয়ে শুধুমাত্র খাতায় কলমে থেকে যাবে বলেই মনে করছে আইন কমিশন৷