মহিলাদের গর্ভবতী করতে পারলেই লাখ লাখ টাকা রোজগারের সুযোগ। প্রতারণার রমরমা কারবারের পর্দাফাঁস হতেই দেশজুড়ে শোরগোল। গর্ভধারণ করতে অক্ষম মহিলাদের গর্ভবতী করার জন্য পুরুষদের দেওয়া হত অর্থের প্রতিশ্রুতি। আর তারপর রেজস্ট্রেশনের নাম লুটে নেওয়া হত তাদের। বিহারের নওয়াদা এলাকায় এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত আটজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, বিহারের নওয়াদা এলাকায় ‘অল ইন্ডিয়া প্রেগন্যান্ট জব এজেন্সি’ নামে একটি সংস্থায় বেশ অনেকদিন ধরেই প্রতারণা চক্র চলছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপ-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এই চাকরির বিজ্ঞাপন দিত। আগ্রহী পুরুষদের সঙ্গে তারা নিজেরাই যোগাযোগ করত। তাদের লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জনের লোভ দেখানো হত। তবে, এই চাকরির জন্য প্রথমে ৭৯৯ টাকা দিয়ে নাম নথিভুক্ত করতে হত আগ্রহী প্রার্থীদের। এই রেজিস্ট্রেশন ফি ছিল জালিয়াতির প্রথম ধাপ। পরের ধাপে, অভিযুক্তরা প্রার্থীদের কিছু মহিলাদের ছবি পাঠাত। বলা হত, এই মহিলারা মা হতে চান। কিন্তু তাঁদের স্বামীর সঙ্গে যৌনতায় তাঁরা গর্ভধারণ করতে পারছেন না। পুরুষদের বলা হত, যে মহিলার সঙ্গে সঙ্গম করে তাঁকে গর্ভবতী করতে চান, তাঁকে বেছে নিতে।
এরপর শুরু হত জালিয়াতির দ্বিতীয় ধাপ। নেওয়া হত সিকিওরিটি ফি বা নিরাপত্তার মূল্য। বেছে নেওয়া মহিলা কতটা ‘আকর্ষণীয়’, তার উপর নির্ভর করত সিকিওরিটি ফি-এর পরিমাণ। এই বাবদ ৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত চাওয়া হত। নওয়াদার পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট কল্যাণ আনন্দ জানিয়েছেন, পুরুষ প্রার্থীদের চক্রের সদস্যরা বলত, সংশ্লিষ্ট মহিলা গর্ভবতী হয়ে পড়লে, তাদের ১৩ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। মহিলা গর্ভধারণ না করলেও টাকা পাওয়া যাবে। সেই ক্ষেত্রে সান্ত্বনা মূল্য হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।”
তবে কতজন এই রকম প্রতারণার শিকার হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। সম্প্রতি সংস্থাটির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিহারের নওয়াদা এলাকায় এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত আটজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও প্রতারণা চক্রের নেতা মুন্না সহ আরও বেশ কয়েকজন অভিযুক্ত এখনও পলাতক। ধৃতদের থেকে ৯টি মোবাইল, প্রিন্টার ও ডাটা উদ্ধার করেছে পুলিশ।