দ্বিতীয়বারের জন্য উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসলেন পুষ্কর সিং ধামি। বুধবার দেরহাদুনের প্যারেড গ্রাউন্ডে একেবারে জমকালো অনুষ্ঠানে শপথ নিলেন পুষ্কর সিং ধামি।এদিন মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যরাও এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জীর্ণ বিজেপি উত্তরাখণ্ডে ধামির বিকল্প খুঁজে পায়নি। তাই খতিমা কেন্দ্র থেকে বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হলেও ফের উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হওয়া ধামির আটকাল না। গত বছরের জুলাইয়েই প্রথমবার উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন পুষ্কর সিং ধামি। উত্তরাখণ্ডের সবচেয়ে কমবয়সি এই মুখ্যমন্ত্রীকে তিরথ সিং রাওয়াতের জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো হয়েছিল।
বুধবার উত্তরাখণ্ডের একাদশতম মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে কার্যত বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার আসর বসেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাশাপাশি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, সকলেই শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। শপথবাক্য পাঠ করান উত্তরাখণ্ডের রাজ্যপাল লেফটেন্যাট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) গুরমিত সিং। ধামি ছাড়াও অনুষ্ঠানে শপথ গ্রহণ করেন উত্তরাখণ্ডের নতুন সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী। সত্পাল মহারাজ, প্রেমচন্দ্র আগরওয়াল, গণেশ জোশী, ধ্যান সিং রাওয়াত, সুবোধ উনিয়াল, রেখা আর্য, চন্দনরাম দাস এবং সৌরভ বহুগুণা অনুষ্ঠানে শপথ নিয়েছেন।
একেবারে চমকপ্রদ রাজনৈতিক জীবন পুষ্কর সিং ধামির। ১৯৭৫ সালে পিথোড়াগড় জেলায় জন্মেছিলেন তিনি। আইনের ডিগ্রি রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। আরএসএসের কর্মী হিসাবে কাজ করেছেন বেশ কিছুদিন। এবিভিপিরও সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০২ ও ২০০৮ সালে তিনি উত্তরাখণ্ডে বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বাবা সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। সেই পুষ্কর সিং ধামির হাতেই এবার উত্তরাখণ্ড রাজ্যের ভার। এই পাহাড়ি রাজ্যে তিনি হলেন ১১তম মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে পরপর দুজন মুখ্যমন্ত্রী গাড়োয়াল রিজিয়ন থেকে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেছিলেন। তবে পুষ্কর সিং ধামি আদতে কূমায়ুন রিজিয়নের ভূমি পুত্র।
বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে পরাজিত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তাতে তাঁর মুখ্যমন্ত্রী হওয়া আটকায়নি। সাংবিধানিক নিয়ম মেনে তিনি পরে ভবানীপুর উপনির্বাচনে জিতে বিধায়ক হয়েছেন। ফলে উত্তরাখণ্ডেও এ বার বিজেপি-কে একটা ‘ভবানীপুর’ খুঁজতে হবে। জিতিয়ে আনতে হবে পুষ্করকে। আর এতেই বাংলার বিরোধী দলেনেতা শুভেন্দু অধিকারীর হাত থেকে তৃণমূলকে আক্রমণ করার অন্যতম অস্ত্র চলে যেতে বসেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলে। বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে ‘পরাজিত মুখ্যমন্ত্রী’ বলে মমতাকে কটাক্ষ করতেন তিনি। ভবানীপুরে জয়ের পরেও ‘কম্পার্টমেন্টাল মুখ্যমন্ত্রী’ বলে আক্রমণ চালান শুভেন্দু। কিন্তু তাঁর দল বিজেপি উত্তরাখণ্ডে যা করল তারপরে কি শুভেন্দু অমন আক্রমণ আর শানাতে পারবেন! প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলের একাংশে।