কুতুব মিনার (Qutub Minar) একটি সংরক্ষিত প্রাচীন সৌধ। সেখানে কোনওভাবেই পূজার্চনার অনুমতি দেওয়া যাবে না। মঙ্গলবার দিল্লির একটি আদালতে জমা করা হলফনামায় এই কথা বলেছে সরকারি সংস্থা আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (Archaeological Survey of India)।
এএসআইয়ের প্রাক্তন রিজিওনাল ডিরেক্টর ধরমবীর শর্মা দাবি করেছিলেন, কুতুবউদ্দিন আইবক নন, সূর্যের গতিপথ পর্যালোচনার জন্য কুতুব মিনার তৈরি করেছিলেন রাজা বিক্রমাদিত্য। তার পর থেকেই সেখানে হিন্দু ও জৈন দেবদেবীর মূর্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে মামলা দায়ের হয়েছিল দিল্লি সাকেত আদালতে।
ধর্মবীরের দাবির প্রেক্ষিতে কুতুব মিনার নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এ-ও শোনা যায়, মিনার চত্বরে খননের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। এ নিয়ে একটি রিপোর্ট তারা এএসআই-এর কাছে তলব করেছিল। কুতুব মিনারের দক্ষিণে যে মসজিদ রয়েছে, তার থেকে ১৫ মিটার দূরত্বে খনন কাজ শুরু হতে পারে। সেই খনন কাজ চালিয়ে এএসআই রিপোর্ট দেওয়ার কথা কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রককে।
আরও পড়ুন: Jammu Kashmir: জম্মু-শ্রীনগর হাইওয়েতে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে ধস, নিখোঁজ বাংলার ৫ শ্রমিক
এদিন সেই মামলায় হলফনামা জমা করল আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (ASI)। হলফনামায় আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া জানায়, “১৯১৪ সাল থেকে কুতুব মিনারকে সংরক্ষণ করছি আমরা।এই স্মৃতিস্তম্ভটি সংরক্ষিত হচ্ছে, সেখানে পুজোপাঠ হত না। ফলে কোনও সংরক্ষিত এলাকার গঠন বদলানো সম্ভব নয়।” তারা ১৯৫৮ সালের দ্য অ্যানসিয়েন্ট মনুমেন্টস অ্যান্ড আর্কিওলজিক্যাল সাইটস অ্যান্ড রিমেইন্স আইনের সংশ্লিষ্ট ধারারও উল্লেখ করেছে। ওই আইন অনুসারে, ওই ধরনের নির্মাণ এলাকায় কোনও জাতীয় উপাসনার অনুমতি দেওয়া যায় না। সরকারি নিয়ামক সংস্থার বক্তব্য, উপাসনা সংক্রান্ত সাংবিধানিক অধিকার বলেও এই অনুমতি কাউকে দেওয়ার সুযোগ নেই সংশ্লিষ্ট আইন দুটিতে। সংশ্লিষ্ট মামলাটি তাই খারিজ করার আর্জি জানিয়েছে তারা।
প্রসঙ্গত, ১১৯৩ খ্রিস্টাব্দে ভারতের প্রথম মুসলমান শাসক কুতুবুদ্দিন আইবকের নির্দেশে কুতুব মিনার নির্মাণ শুরু হয়। দিল্লিতে কুতুব কমপ্লেক্সে অবস্থিত মিনারটি বিশ্বে ইটের তৈরি সর্বোচ্চ মিনার। প্রসঙ্গত, ইউনেস্কোর ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এর অন্তর্গত কুতুব মিনার। ইঁটের তৈরি মিনারের মধ্যে এটিই বিশ্বের দীর্ঘতম। দৈর্ঘ্য ৭২.৫ মিটার। এখানে রয়েছে ৩৭৯টি ঘোরানো সিঁড়ি।
আরও পড়ুন: JK Hospital: ‘মৃত’ লিখে দিয়েছিল হাসপাতাল, কবর থেকে তুলে বাবা-মা দেখলেন মেয়ে এখনও বেঁচে!