‘মোদী’ পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে দু’বছর জেলের সাজাপ্রাপ্ত রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। শুক্রবার লোকসভা সচিবালয়ের তরফে এ কথা জানানো হল।
সুরাটের আদালত রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করার পর থেকেই তাঁর উপর সাংসদ পদ বাতিলের খড়্গ ঝুলছিল। কংগ্রেসের (Congress) তরফেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছিল, রাহুলকে সংসদ থেকে দূরে রাখার উদ্দেশ্যেই বিচারবিভাগকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে বিজেপি। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। শুক্রবার সংসদের সচিবালয় থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হল, বৃহস্পতিবার থেকেই রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ হয়েছে। তাঁর ওয়ানড় (Wayanad) লোকসভা কেন্দ্রটি এখন সাংসদ শূন্য।
সুরাত জেলা আদালতের বিচারক এইচএইচ বর্মা রাহুলকে ১০ হাজার টাকার জামিনে মুক্তি দিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে উচ্চতর আদালতে আপিল করার অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দোষী সাব্যস্ত করার উপর কোনও স্থগিতাদেশ দেননি তিনি। আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এ ক্ষেত্রে ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদের পদ রক্ষার পথে অন্তরায় হয়েছে, ২০১৩ সালের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়। ঘটনাচক্রে, এক দশক আগে ওই রায় কার্যকর করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিলেন তিনিই।
পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত লালু প্রসাদের সাংসদ পদ বাঁচাতে মনমোহন সিংহের সরকার অধ্যাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্টের রায় উল্টে দিয়ে পুরনো ব্যবস্থা বহাল রাখার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু রাহুল সেই অধ্যাদেশ ছিঁড়ে বাতিল কাগজের ঝুলিতে ফেলে দেওয়ার কথা বলার পর পিছু হটেছিল তৎকালীন ইউপিএ সরকার। এবার সুপ্রিম কোর্টের ২০১৩ সালের সেই নির্দেশের ভিত্তিতেই সাংসদ পদ খারিজ হল ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদের। ওই আইন বলছে, সাংসদ পদ খারিজ হওয়া রাহুল অন্তত আগামী ৮ বছর (২ বছর জেল এবং সাজার মেয়াদ শেষের পরে আরও ৬ বছর) কোনও ভোটে লড়তে পারবেন না।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে কর্নাটকে প্রচারে গিয়ে রাহুল প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘সব চোরেদের পদবি ‘মোদী’ হয় কেন?’’ আইপিএল কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ললিত মোদী, ব্যাঙ্ক-ঋণ মামলায় ‘পলাতক’ নীরব মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তুলনা টেনেছিলেন তিনি। ওই ঘটনায় রাহুলের বিরুদ্ধে ‘পদবি অবমাননার’ অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৯ এবং ৫০০ ধারায় অপরাধমূলক মানহানির মামলা করেছিলেন গুজরাতে বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদী। সেই মামলাতেই দোষী সাব্যস্ত হলেন রাহুল।
আরও পড়ুন: Marriage: সাধ ছিল বউমা দেখার, বাবার মৃতদেহের সামনেই প্রেমিকাকে বিয়ে ছেলের