লোকসভায় রাহুল গান্ধীর বক্তব্যের বড় অংশ বাদ দিয়ে দিয়েছেন স্পিকার ওম বিড়লা। স্পিকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে মঙ্গলবার তাঁকে কড়া ভাষায় চিঠি লিখেছেন রাহুল গান্ধী। স্পিকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে রাহুল লিখেছেন ‘আমার যে বক্তব্য আপনি বাদ দিয়েছেন তা এক বর্ণ মিথ্যে নয়। ঘোর বাস্তব। সবাই সব দেখতে পাচ্ছেন। অনুগ্রহ করে ভুল শুধরে আমার বক্তব্য সভার কার্যবিবরণীতে ফেরান।’
“I am writing this in the context of remarks and portions expunged from my speech during discussion on Motion of Thanks on the President Address on 1 July 2024.”
Here is LoP Shri @RahulGandhi‘s letter to the Speaker of the Lok Sabha. pic.twitter.com/3Cepk0TtMy
— Congress (@INCIndia) July 2, 2024
তারিখ ও সময় উল্লেখ করে রাহুল জানিয়েছেন, যে যুক্তিতে তাঁর মন্তব্যকে সরানো হয়েছে তা ধারা ৩৮০-র মধ্যে পড়ে না। কারণ তিনি কোনও ‘কুমন্তব্য’ বা ‘অপশব্দ’ ব্যবহার করেননি। রাহুলের কথায়, “আমার ভাষণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ যেভাবে বহিষ্কারের আড়ালে কার্যধারা থেকে সরানো হয়েছে তা দেখে আমি হতবাক। আমি সংসদের অধিবেশে যা বলেছি তা নিখাদ সত্যি। সংসদের প্রতিনিধিরা জনগণের সম্মিলিতি কণ্ঠস্বরকে ব্যক্ত করেন। এটাই ভারতীয় সংবিধানের ১০৫ (১) ধারার বাকস্বাধীনতা। সাধারণ মানুষের কথা বলা সংসদের প্রত্যেক সদস্যের অন্যতম অধিকার।” রাহুল আরও বলেন, “আমার মন্তব্য রেকর্ড থেকে সরিয়ে নেওয়া সংসদীয় গণতন্ত্রের নীতির পরিপন্থী।” রাহুল চিঠিতে বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন মন্ত্রী অনরাগ ঠাকুরের নাম উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, অনুরাগ ঠাকুরের বক্তব্যের সামান্য অংশ আপনি বাদ দিয়েছেন। অথচ আমার ভাষণের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অংশ ছেঁটে দিয়েছেন। এটা এক ধরনের পক্ষপাতিত্ব।
প্রসঙ্গত, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ এবং সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু সোমবার রাতে স্পিকারের সঙ্গে দেখা করে বিরোধী দলনেতার ভাষণের বড় অংশ নিয়ে আপত্তি জানান। অধিবেশন কক্ষেও সোমবার রাহুলের বিরুদ্ধে টানা সক্রিয় ছিলেন শাহ। তিনিই প্রথম দাবি তোলেন রাহুলকে ক্ষমা চাইতে হবে।
স্পিকারের অফিস সুত্রে সকালেই জানা গিয়েছিল, সরকারের দাবি মেনে রাহুলের ভাষণের অনেকটাই বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে লোকসভার কার্যবিবরণী থেকে। রাহুল বলেছিলেন, বিজেপি সমাজে বিভাজন তৈরি করে। তারা লাগাতার এই কাজে যুক্ত থাকে্। বাদ গিয়েছে বিরোধী দলনেতার এই বক্তব্য।
সোমবার সংসদে রাহুল (Rahul Gandhi) বলেন, “এই দেশ ভয়ের দেশ নয়। আমাদের পূর্বপুরুষরা অহিংসার কথা বলেছেন। ভগবান শিব তাঁর গলায় সাপ নিলেও তাঁকে দেখা যায় অভয়মুদ্রায়। যার অর্থ ভয় পেয়ো না। অন্যদিকে, যারা নিজেদের হিন্দু বলছে তাঁরা দিনরাত শুধু হিংসা, অসত্য ও ঘৃণা ছড়িয়ে চলেছে। আপনারা (বিজেপি) হিন্দুই না। হিন্দুধর্মে স্পষ্ট লেখা হয়েছে, সত্যের সঙ্গে দাঁড়াও। সত্যের জন্য লড়াই করো।” একইসঙ্গে তিনি জানান, ”বিজেপি কিংবা আরএসএস হিন্দু সমাজ নয়।”
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “মোদীর দুনিয়ায় সত্যিটাকে সবসময়ে মুছে ফেলা হয়। কিন্তু বাস্তব থেকে সত্যিকে সরানো যাবে না। আমার যা বলার ছিল সেটা বলেছি। সেটাই সত্যি। ওরা যা পারে মুছে ফেলুক, তবুও সত্যিটা সত্যিই থাকবে।”