‘আপনি এমন কিছু ভোলাভালা নন যে, আদালতে কী ঘটছে সে সম্পর্কে কিছুই টের পাচ্ছেন না!’ মঙ্গলবার যোগগুরু বাবা রামদেবকে ঠিক এই ভাষাতেই ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট।
মঙ্গলবার রামদেব এবং পতঞ্জলির ম্যানেজিং ডিরেক্টর আচার্য বালকৃষ্ণকে সশরীরে হাজিরা দিতে হয়। কোভিড নিরাময় এবং অন্যান্য রোগব্যাধি সারাতে পতঞ্জলির আয়ুর্বেদ চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিশ্বস্ত ও পরিপূর্ণ নির্মূল করে বলে বিজ্ঞাপনে দাবি করেছিল এই সংস্থা। তা নিয়ে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের একটি আবদনে সাড়া দিয়ে আদালত দুজনকে একাধিকবার তলব করলেও তাঁরা হাজিরা দেননি। তখন আদালত অবমাননার মামলা হয় রামদেব এবং বালকৃষ্ণর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিতে আদালতে উপস্থিত হন পতঞ্জলি সংস্থার প্রধান আচার্য বালকৃষ্ণ ও বাবা রামদেব। আদালতে তাঁদের আইনজীবী মুকুল রোহতগি বলেন, বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের জন্য জনসমক্ষে ক্ষমা প্রার্থনা করতে চান তারা। আদালত অমান্য করার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্ষমা চাইবেন অভিযুক্তরা। পাশাপাশি আদালতে রামদেব বলেন, ‘আগামী দিনে আমি এই বিষয়ে সতর্ক থাকব। আমি জানি কোটি কোটি মানুষ আমাদের সঙ্গে জুড়ে রয়েছেন।’ রামদেবের বক্তব্য শোনার পর আদালত জানায়, “আমাদের কঠোর মনোভাবের পর আপনি এই ধরনের মন্তব্য করছেন।” পাশাপাশি বলা হয়, “আপনি নিজেও জানেন, যে অসুখের চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয়নি, তার চিকিৎসা আপনিও করতে পারবেন না। ফলে আইন সকলের জন্য সমান।” কেন ক্ষমা করা হবে, সে প্রশ্ন তোলে শীর্ষ আদালত।
অন্যদিকে, এলোপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে কুৎসা প্রসঙ্গে আচার্য বালকৃষ্ণ বলেন, ‘আমাদের অজ্ঞানতাবশত ভুল হয়ে গিয়েছে।’ পালটা শীর্ষ আদালত জানায়, ‘আপনি এলোপ্যাথির দিকে আঙুল তুলতে পারেন না।’ রামদেব জানান, ‘অতি উৎসাহিত হয়ে আমরা এই কাজ করে ফেলেছি। এলোপ্যাথি নিয়ে আমরা কখনও আর কিছু বলব না। এই বিষয়ে আমরা সজাগ থাকব।’ যদিও সুপ্রিম কোর্টের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘আদালতে এসব অনুনয় গ্রাহ্য হয় না। আপনাদের অতীত উদাহরণ ভালো নয়। ফলে আপনাদের ক্ষমা চাওয়ার আবেদন স্বীকার করা হবে কি না, আমরা পরে সিদ্ধান্ত নেব।’ এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ২৩ এপ্রিল। সেদিন রামদেব ও বালকৃষ্ণ দুজনকেই আদালতে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।