বিয়ে মানে এক নৃশংস জন্তুকে বাইরে ছেড়ে রাখা নয়। স্বামীর বিরুদ্ধে আনা ধর্ষণের (Marital Rape) অভিযোগের মামলায় সম্প্রতি এই পর্যবেক্ষণ কর্ণাটক হাইকোর্টের। পাশাপাশি অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ধর্ষণের ধারায় মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছে আদালত (Karnataka high Court)। স্ত্রীকে যৌনদাসী করে রেখেছিল। এই অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক মহিলা। তাঁর পক্ষেই বুধবার রায় দিয়েছে আদালত।
রায় দিতে গিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠান কখনই কোনও পুরুষকে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দিতে পারে না। কিংবা একজন নৃশংস জন্তুকে বাইরে ছেড়ে রাখতে পারে না। স্ত্রীর সম্মতির বিরুদ্ধে নৃশংস যৌন নির্যাতন ধর্ষণের নামান্তর। এই ধরনের নির্যাতন স্ত্রীর মনে গভীর ছাপ ফেলে। পাশাপাশি প্রভাবিত হয় শারীরিক পরিস্থিতিও। তাই আইন প্রণেতাদের উচিৎ এখন থেকে নীরবতায় কান দিয়ে তার কণ্ঠ শোনা।’
বিচারপতি এম নাগাপ্রসন্ন জানিয়েছেন, ধর্ষণের ঘটনা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারায় শাস্তিযোগ্য। (Rape is Rape Be it Performed by Man or Husband) বিচারপতি এটিও বলেছেন, সম্পর্কে স্বামী হলেও কোনও পুরুষ মানুষ যদি অপরিচিত কোনও পুরুষের মতো নির্দয় হয়ে স্ত্রীকে যৌনতায় বাধ্য করেন, তা হলে তা সমান শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবেই ধরা হবে। আদালত বলেছে, একজন পুরুষ, পুরুষই। ধর্ষণ ধর্ষণই! (Rape is Rape Be it Performed by Man or Husband) স্বামী হলেও পুরুষ হিসাবে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তা শাস্তি যোগ্য অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হবে।
বিচারপতি আরও জানিয়েছেন, কোনও বৈবাহিক সম্পর্কে সাধারণত পুরুষ একটি লিঙ্গ প্রাধান্যের অবস্থানে থাকেন। যা গ্রহণযোগ্য নয়। দীর্ঘকাল ধরে ভারতীয় সমাজে মহিলাদের সম্পত্তি হিসাবে বিবেচনা করার মতো ঘটনা দেখা যায়। দীর্ঘ কাল ধরে যে একটি চিন্তা চলে আসছে যে স্ত্রীয়ের মগজ, শরীর ও মনে শাসন করার অধিকার একমাত্র স্বামীর রয়েছে, তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। যে মামলার শুনানি চলছিল, তাতে স্ত্রী অভিযোগ এনেছিলেন স্বামীর বিরুদ্ধে। আদালত সেই মামলায় স্বামীকে ৩৭৬ ধারায় অভিযুক্ত বলে ঘোষণা করে।
বৈবাহিক ধর্ষণকে ফৌজদারি অপরাধ করার দাবি বহুদিনের। কিন্তু সেই দাবি এখনও ভারতীয় আইনে মান্যতা পায়নি। তাই এদিন আদালত বলেছে, বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে কেন গণ্য করা হয়নি। এই নিয়ে কথা হচ্ছে না। বরং আইনসভা বিষয়টিকে গুরুত্বদিয়ে বিচার করুক।