সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা খেল কেন্দ্র। আপাতত স্থগিত হয়ে গেল রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের প্রয়োগ। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, কেন্দ্রীয় সরকার যতদিন না ব্রিটিশ আমলে তৈরি আইনের পুনর্বিবেচনা করছে, তত দিন পর্যন্ত এই আইন প্রয়োগ স্থগিত থাকবে। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই আইনে আর কোনও গ্রেফতার হবে না। ইতিমধ্যেই এই আইন প্রয়োগ করে যে সমস্ত মামলা চলছে, তা স্থগিত হয়ে যাবে। এই আইনের বলে বন্দিরা জামিনের আবেদন করতে পারবেন।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আপাতত রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে কোনও এফআইআর দায়ের করা উচিৎ হবে না। ব্রিটিশ আমলে তৈরি হওয়া এই আইন ১৬২ বছর পর প্রথমবার স্থগিত রাখা হল। আরও বলা হয়েছে, যদি রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে মামলা রুজু করা হয়, তাহলে অভিযুক্তরা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর আদালতে যেতে পারে। যদি কারও নামে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা রুজু হয়ে থাকে, তাহলে এখনই তাঁকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।
পাশাপাশি সেই মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতগুলিকে। ইতিমধ্যেই এই আইনের বলে যাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁরা জামিনের জন্য আবেদন করতে পারবেন বলেও জানানো হয়েছে। একান্ত প্রয়োজন পড়লে এসপি পদমর্যাদার অফিসার এই আইনে মামলা রুজু করতে পারেন। তবে বিনোদ দুয়া মামলায় রায় অনুসারেই নতুন মামলা দায়ের করতে হবে।
আরও পড়ুন: Chennai: আমেরিকা-ফেরত দম্পতিকে খুন করে ৫ কোটি মূল্যের গয়না লুট, ধৃত দুই পরিচারক
রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বলেই স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় মহাত্মা গান্ধীর মতো নেতাদের গ্রেপ্তার করা হত। এখনও এই ধরনের আইন বলবৎ করা উচিত কিনা, তা নিয়ে আগেও কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রশ্ন করেছে সর্বোচ্চ আদালত। এমনকী এই আইনের দ্বারা সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারে, এই আশঙ্কাও প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি।
এই প্রসঙ্গে অন্যতম মামলাকারী তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র নিজের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘‘আমার দীর্ঘদিনের লড়াই আজ স্বীকৃতি পেল। সুপ্রিম কোর্টের মহামান্য প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চকে এই রায় প্রদানের জন্য আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। আশা রাখি যে কেন্দ্রীয় সরকার যথোপযুক্ত পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে এই আইনের বিলোপ ঘটাবে।’’
আরও পড়ুন: Minority Status: হিন্দুদের ‘সংখ্যালঘু’ মর্যাদা দিতে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আরও সময় চাইল কেন্দ্র