পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী (Keshari Nath Tripathi) প্রয়াত। বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। রবিবার ভোর ৫টা নাগাদ উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মাসখানেক ধরে অসুস্থ ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর পা পিছলে বাথরুমে পড়ে গিয়েছিলেন। তার জেরে হাত ভেঙে গিয়েছিল। তারপর থেকেই শরীর ভালো ছিল বিজেপি নেতার। অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। সেইসঙ্গে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রাও কমে যাচ্ছিল। সেই পরিস্থিতিতে ৩০ ডিসেম্বর তাঁকে প্রয়াগরাজের সিভিল লাইনসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল।
কয়েকদিন পর হাসপাতাল ছাড়া পেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল। কিন্তু ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করছিলেন না। ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন। রবিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ প্রয়াগরাজের বাসভবনে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮। সূত্রের খবর, আজ সন্ধ্যায় প্রয়াগরাজে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
১৯৩৪ সালের ১০ নভেম্বর ইলাহাবাদে জন্ম কেশরীনাথের। ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত তিনি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের দায়িত্ব সামলেছেন। এ ছাড়া, অল্প সময়ের জন্য সামলেছেন বিহার, মেঘালয় ও মিজোরামের রাজ্যপালের দায়িত্বও।
কেশরীনাথ ত্রিপাঠী ১৯৪৬ সালে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সদস্য হয়ে এবং ১৯৫২ সালে ডানপন্থী রাজনৈতিক দল জনসঙ্ঘে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তিনি ১৯৫৩ সালে জনসংঘের শুরু করা কাশ্মীর আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এর কারণে তিনি গ্রেফতার হন এবং নৈনী কেন্দ্রীয় কারাগারে স্বল্প মেয়াদে কারাবাস করেন।
ঝুসি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জনতা পার্টির সদস্য হিসাবে, তিনি ১৯৭৭ থেকে ৮০ সাল পর্যন্ত বিধায়ক ছিলেন। এরই মধ্যে ইউপিতে প্রাতিষ্ঠানিক অর্থ ও বিক্রয় কর মন্ত্রকের মন্ত্রীর দায়িত্বও দেওয়া হয় তাঁকে। কেশরীনাথ ত্রিপাঠী ১৯৮০ সালের এপ্রিল মাসে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দেন। এর পরে তিনি ১৯৮৯, ১৯৯১, ১৯৯৩, ১৯৯৬ এবং ২০০২ সালে এলাহাবাদ দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন।
আরও পড়ুন: Delhi Crime: স্কুটিতে বেপরোয়া ধাক্কা, তরুণীকে ছেঁচড়ে ১২ কিলোমিটার নিয়ে গেল ঘাতক গাড়ি
তিনি ১৯৯১ থেকে ৯৩ এবং ১৯৯৭ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত উত্তর প্রদেশ বিধানসভার স্পিকার ছিলেন। ২০০৪ সালে, তাকে ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য সভাপতি করা হয়েছিল এবং বিজেপির জাতীয় শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যও ছিলেন। ২০১২ সালে, প্রয়াগরাজের এলাহাবাদ দক্ষিণ বিধানসভা আসন থেকে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং পরাজিত হন। এখান থেকেই রাজনৈতিক কেরিয়ারের পতন শুরু হয় তাঁর।
তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার সকালে টুইট করে তিনি লিখেছেন, ‘‘কেশরীনাথ ত্রিপাঠী নিজের কাজ এবং জ্ঞানের দৌলতে সকলের শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে উঠেছিলেন। সাংবিধানিক বিষয়ে তাঁর যথেষ্ট পারদর্শিতা ছিল। উত্তরপ্রদেশে বিজেপির সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। রাজ্যের উন্নয়নেও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর মৃত্যুতে আমি শোকাহত। তাঁর পরিবার ও পরিজনকে আমার সমবেদনা জানাই।’’
Shri Keshari Nath Tripathi Ji was respected for his service and intellect. He was well versed in Constitutional matters. He played a key role in building BJP in UP and worked hard for the state’s progress. Pained by his demise. Condolences to his family and admirers. Om Shanti. pic.twitter.com/mQqirPTPvy
— Narendra Modi (@narendramodi) January 8, 2023
আরও পড়ুন: Gurugram: বাইকে চড়ার প্রস্তাবে ‘না’, হেলমেট দিয়ে তরুণীকে বেধড়ক মার, ভাইরাল ভিডিয়ো