গাজিয়াবাদের হিন্ডন বায়ুসেনা ঘাঁটিতে অবতরণের পর সোমবার সন্ধ্যায় ভারতের মুখ্য নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন শেখ হাসিনা। এমনটাই জানিয়েছে সংবাদসংস্থা এএনআই। পরিস্থিতি বুঝে ডোভাল রিপোর্ট দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে।
C-130 এয়ারক্র্যাফ্টে ঢাকা থেকে ভারতের গাজ়িয়াবাদে এসে পৌঁছন শেখ হাসিনা। সেখানে হিন্ডন এয়ারবেসে তাঁর সঙ্গে কথা হয় অজিত ডোভালের। সঙ্গে ছিলেন আরও সামরিক আধিকারিকরাও। ভারতীয় বায়ুসেনা এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে শেখ হাসিনার নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে বলে সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে খবর। তাঁকে একটি সেফ হাউসে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলেও জানা যাচ্ছে। যদিও এই প্রসঙ্গে এখনও ভারত সরকারের তরফে কোনও অফিসিয়াল বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
সূত্রকে উদ্ধৃত করে এএনআই দাবি করেছে, গাজিয়াবাদে ভারতীয় বায়ুসেনার সি-১৭ এবং সি-১৩০জে সুপার হারকিউলিসের কাছে ‘পার্ক’ করা থাকবে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সি-১৩০জে বিমান। ভারতীয় বায়ুসেনার প্রতিনিধিকে হাই অ্যালার্টে রাখা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিটি সেক্টরেই সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলেও সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর। প্রথমে শোনা গিয়েছিল, সোমবার রাতেই তিনি লন্ডনের উড়ান ধরতে পারেন। পরে জানা যায়, হাসিনার রাজনৈতিক আশ্রয়ের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে ব্রিটেন। যদিও সরকারি সূত্রে এর কোনও সমর্থন মেলেনি। তবে তেমন হলে হাসিনা আগামী কয়েক দিন দিল্লিতেই ‘সেফ হাউসে’ থাকতে পারেন।
বাংলাদেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে ভারতেও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সোমবার সন্ধ্যায় সাক্ষাৎ করেছেন এস জয়শঙ্কর। সংবাদসংস্থা সূত্রে জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিদেশমন্ত্রী বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছেন তাঁকে। বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীও সাক্ষাৎ করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে। তাঁদের মধ্যেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্র মারফত খবর। এই পরিস্থিতিতে সকলকে শান্ত থাকার অনুরোধ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ইতিমধ্যেই হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে BSF। DG পৌঁছে গিয়েছেন কলকাতায়।
বাংলাদেশ এবং ভারতের মাঝে রয়েছে ৪,০৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত। সোমবার সীমান্তে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঢাকাগামী বিমান বাতিল করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। বাংলাদেশ এবং ভারতের মাঝে ট্রেন চলাচল আগেই বন্ধ করা হয়েছে। ৩০ ঘণ্টার জন্য বাংলাদেশগামী বিমান বাতিল করেছে বিমান সংস্থা ইন্ডিগো। বিমান সংস্থা ভিস্তারা জানিয়েছে, পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে তারা। তবে এখনই বিমান বাতিলের কথা ঘোষণা করেনি এই সংস্থা। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ছ’ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।