গালওয়ান সংঘর্ষের পর এখনও দু’দেশের সম্পর্কে বিশ্বাস ও আস্থা পুরোপুরি ফেরেনি, তার মধ্যে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের (Pak Occupied Kashmir) একাংশে বেআইনি ভাবে চিনা সড়ক নির্মাণের খবরে নতুন করে উত্তেজনার চোরাস্রোত। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির উপগ্রহচিত্রে (Illegal Road Construction By China) এই সড়কের ছবি ধরা পড়ে বলে খবর।
উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের শাকসগাম এলাকায় সড়ক বানাচ্ছে চিন (China)। উল্লেখ্য, ১৯৬৩ সালে ওই এলাকাটি চিনের হাতে তুলে দিয়েছিল পাকিস্তান। তার পর থেকে সেখানে একের পর এক পরিকাঠামো গড়ে তুলেছে বেজিং। এবার ওই এলাকায় পৌঁছনো যাবে চিনের জাতীয় সড়ক ধরেই। পার্বত্য এলাকাতেই সম্প্রসারিত হবে জাতীয় সড়ক। জানা গিয়েছে, গত বছরের জুন ও আগস্ট মাসে তোলা হয়েছিল ওই উপগ্রহচিত্রগুলো।
পশ্চিম চিনের শিনজিয়াং প্রদেশের কাশগড় থেকে দক্ষিণ পাকিস্তানের গদর বন্দর পর্যস্ত বিস্তৃত কারাকোরাম হাইওয়ে (যার পোশাকি নাম— চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর বা সিপিইসি) গিয়েছে শাক্সগাম উপত্যকার অদূর থেকেই। ১৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ‘বাই লেন’ মহাসড়ক চিনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ কর্মসূচির অন্যতম প্রধান অঙ্গ। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দ্রুত সেনা এবং সামরিক সরঞ্জাম পরিবহণের উদ্দেশ্যেই শাক্সগাম থেকে সিপিইসি সংযোগকারী রাস্তা বানাচ্ছে চিনা ফৌজ। যা ভারতের পক্ষে উদ্বেগজনক।
গত কয়েক বছর ধরেই পূর্ব লাদাখ, উত্তরাখণ্ড, সিকিম এবং অরুণাচল প্রদেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) এমনকি, ভারতীয় ভূখণ্ডের অন্দরে নির্মাণের কাজ চালানো এমনকি, গ্রাম বানানোর অভিযোগ উঠেছে চিনা ফৌজের বিরুদ্ধে। এ বার তার নজির মিলল সিয়াচেন এলাকাতেও।
সেনাবাহিনীর ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কর্পসের প্রাক্তন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাকেশ শর্মা বলেছেন, ‘এই রাস্তাটি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং ভারতকে অবশ্যই কূটনৈতিকভাবে এর প্রতিবাদ জানাতে হবে।’ প্রসঙ্গত, বিশ্বের সর্বোচ্চ যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হয় সিয়াচেন। প্রসঙ্গত, মার্চ মাসের পর দুবার সিয়াচেনে গিয়েছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেখানে দাঁড়িয়ে ‘শত্রু’ দেশকে হুঁশিয়ারিও দিয়ে এসেছেন। কিন্তু নতুন উপগ্রহ চিত্র সামনে আসার পর মুখে কুলুপ এঁটেছেন তিনি। ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন লোকসভা ভোটের প্রচার নিয়ে।