ভারতে ঘৃণা-ভাষণের প্রবণতা বৃদ্ধি নিয়ে দিন দুয়েক আগে সরব হয়েছিলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস। এ বার সেই প্রসঙ্গেই কড়া মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। ঘৃণা-ভাষণের ঘটনায় প্রশাসনকে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। শুক্রবার সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ঘৃণা ছড়ানোর ঘটনায় প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ করতে ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে আদালত অবমাননার মামলা রুজু করা হবে। ঘৃণা-ভাষণ সংক্রান্ত ওই মামলায় বিচারপতিদের মন্তব্য, ‘‘আমরা এখন একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে রয়েছি। ধর্মের নামে কোথায় পৌঁছে গিয়েছি আমরা?’’
বিচারপতি কেএম যোশেফ ও বিচারপতি ঋষিকেশ রায়ের বেঞ্চ সংখ্য়ালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে একাধিক ঘৃণাসূচক মন্তব্য নিয়ে কার্যত উষ্মা প্রকাশ করেন। আদালতের নির্দেশ, অভিযুক্তদের ধর্ম দেখার দরকার নেই। এনিয়ে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়টি রক্ষিত হয়।
আরও পড়ুন: সূর্যকুণ্ডের চিন্তন শিবিরে অমিত শাহের ডাকা বৈঠকে যাচ্ছেন না মমতা, সূত্র নবান্ন
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির (Central Government) কাছে ঘৃণাভাষণ নিয়ে জবাব তলব করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। পরেরদিনই দেশের সকল প্রশাসনের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিল শীর্ষ আদালত। মুসলিমদের তরফ থেকে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, কেন্দ্র ও রাজ্য প্রশাসনগুলিকে যেন ঘৃণাভাষণের অভিযোগের সঠিক তদন্ত করতে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। আবেদনকারীদের হয়ে এই মামলা লড়ছিলেন কপিল সিব্বাল। সাম্প্রতিককালে বিজেপি নেতারা কিভাবে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক মন্তব্য করেছেন, তার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। ওই আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল, ২০২১ সালের ১৭ ও ১৯ ডিসেম্বরের মধ্যে অন্তত ৯জন নেতা দিল্লি ও হরিদ্বার এলাকায় মুসলিমদের গণহারে হত্যা করার হুমকি দিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, ভারত সফরে এসে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছিলেন, ভারতে ঘৃণাভাষণের অভিযোগের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশনের নির্বাচিত সদস্য হিসাবে এমন অভিযোগ থাকা একেবারেই কাম্য নয়। গুতেরেসের এহেন মন্তব্যের মাত্র দু’দিন পরেই কড়া বার্তা দিল শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন: ‘গীতাতেও শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে জেহাদ শিখিয়েছিলেন’, প্রাক্তন স্পিকারের মন্তব্যে বিতর্ক