আপাতত বুলডোজারের চাকায় তালা দিল সুপ্রিম কোর্ট
আপাতত বুলডোজারের চাকায় তালা দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১ অক্টোবর। ওই দিন পর্যন্ত কোনও রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসন ‘বেআইনি নির্মাণ’ ভাঙার যুক্তিতে বুলডোজার চালাতে পারবে না অভিযুক্ত কিংবা অপরাধীর বাড়িতে। মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, বুলডোজার নীতি ভারতীয় সংবিধান মূল চেতনা বা ভাবনার পরিপন্থী।
যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশে জন্ম বুলডোজার দাওয়াইয়ের। এরপর তা দেখা গিয়েছে একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যে। এই প্রবণতার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। গত ২ সেপ্টেম্বর শুনানিতে বুলডোজার নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি বি আর গাভাই, বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে জানায়, কেউ অভিযুক্ত বা দোষী হলেই তাঁর বাড়ি ভাঙা যায় না। এমন কোনও আইন নেই। বাড়ি ভাঙার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নিয়ম থাকা উচিত। ভাঙলে সেই পদ্ধতিতে ভাঙতে হবে। শীর্ষ আদালত অন্তর্বর্তী নির্দেশে বলেছে, ‘‘এমনকি, একটিও বেআইনি নির্মাণ যদি বুলডোজ়ার দিয়ে ভাঙা হয়, তা হবে আমাদের সংবিধানের চেতনার পরিপন্থী।’’
তবে সরকারি রাস্তা, জলাশয়, রেললাইনের ধার বা ফুটপাথ জবরদখল করে গড়ে ওঠা বেআইনি নির্মাণের ভাঙার ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে বিচারপতির বেঞ্চ। কেবলমাত্র বেসরকারি জমিতে গড়ে ওঠা নির্মাণের ক্ষেত্রেই এই নির্দেশ প্রযোজ্য। আদালতে কেন্দ্রের তরফে উপস্থিত ছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তাঁর উদ্দেশে দুই বিচারপতির বেঞ্চের প্রশ্ন, “অভিযুক্ত হলেই কী ভাবে একজনের বাড়ি ভেঙে ফেলা যায়? দোষী সাব্যস্ত হলেও ভেঙে ফেলা যায় না।”
বিজেপি সরকারকে আইন দেখানো সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। মানবতা ও ইনসাফকে দমিয়ে রাখা এই বর্বর নীতির পর্দা ফাঁস করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই দেশ সংবিধানের নির্দেশেই চলবে, বুলডোজার ইনজাস্টিস এখানে সফল হতে পারবে না।