দেশের বিচারক ও বিচারপতিদের কোনও বিষয়ে আলটপকা মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে সতর্ক করল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায় এবং নারীবিদ্বেষী কোনও এলেবেলে গোছের মন্তব্য করে বসবেন না।
২১ সেপ্টেম্বর বেঙ্গালুরুর মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা গোরি পালিয়াকে পাকিস্তান হিসাবে উল্লেখ করেছিলেন কর্নাটক হাই কোর্টের বিচারপতি বেদব্যাসাচর শ্রীষানন্দ। সেই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। আরও একটি ভিডিয়োতে দেখা যায়, আদালতকক্ষে জনৈক মহিলা আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে অসম্মানজনক মন্তব্য করছেন বিচারপতি। বিতর্কিত ওই দুই মন্তব্যের ভিত্তিতেই স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার সেই মামলার শুনানি ছিল প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে। ছিলেন বিচারপতি সন্দীপ খান্না, বিচারপতি ভূষণ গভই, বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি হৃষিকেশ রায়ও। সেই শুনানিতেই শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘‘ভারতের কোনও অংশকেই পাকিস্তান বলা যাবে না। এটি জাতীয় ঐক্যের পরিপন্থী।’’
কর্নাটক হাইকোর্টের ওই বিচারপতি সর্বোচ্চ আদালতের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ায় মামলাটি নিয়ে আর অগ্রসর না হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বেঞ্চ। সেই সঙ্গে বেশ কয়েকটি তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ বিচারক ও বিচারপতিদের জন্য দিয়েছে। পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, এই যুগে, যেখানে আদালতের যাবতীয় কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করা হয়, সেখানে এমন ধরনের মন্তব্য করার আগে সতর্ক হতে হবে বিচারক এবং আইনজীবীদের। সেই সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত মতামত এবং ধ্যানধারণা দূরে সরিয়ে নিরপেক্ষ ভাবে বিচার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, বর্ষীয়ান কৌঁসুলি ইন্দিরা জয়সিং গত ১৯ সেপ্টেম্বর একটি এক্স পোস্টে ওই বিচারপতির শুনানির একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি ভারতের প্রধান বিচারপতির কাছে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করার আর্জি জানান এবং ওই বিচারপতিকে লিঙ্গ সমতা বজায় রাখার প্রশিক্ষণে পাঠানোর দাবি তোলেন।
পাকিস্তান মন্তব্য ছাড়াও বিচারপতি শ্রীশানন্দ আরেকটি মামলায় এক মহিলা আইনজীবীকে লিঙ্গ বৈষম্য সংক্রান্ত আপত্তিজনক মন্তব্য করেন বলে ভিডিওতে দেখা গিয়েছে। যা নিয়ে এক্সে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।