২০১৪ সালে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার আগে কালো টাকার বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। দাবি করেছিলেন বিজেপি ক্ষমতায় এলে বিদেশে গচ্ছিত ভারতীয়দের কালো টাকা ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বিদেশ থেকে টাকা ফেরা তো দূরের কথা, সুইস ব্যাংকে ভারতীয়দের জমার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। মাত্র এক বছরে বিদেশের এই ব্যাংকে ভারতীয়দের গচ্ছিত টাকার অঙ্কটা প্রায় দেড়গুণ হয়ে গেল। বার্ষিক হিসেব বলছে ২০২১ সালে শুধু ভারতীয়দের জমা আমানতের পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। যা কিনা গত ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
সুইস ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের তথ্য বলছে, ২০২১ সালে সেখানে ভারতীয় ব্যক্তি ও সংস্থাগুলির মোট আমানতের পরিমাণ ৩৮৩ কোটি সুইস ফ্রাঁ (প্রায় ৩০,৫০০ কোটি টাকা)। গত ১৪ বছরের মধ্যে এই টাকার পরিমাণ সর্বোচ্চ। বস্তুত, সে সময় থেকেই সুইস ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে আমানতের তথ্য প্রকাশ্যে আনা শুরু হয়। ২০২০ সালে সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয় ব্যক্তি ও সংস্থাগুলির মোট আমানতের পরিমাণ ২৫৫ কোটি সুইস ফ্রাঁ (প্রায় ২০,৭০০ কোটি টাকা)। অর্থাৎ, এক বছরের মধ্যে তা বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: Rahul Gandhi: হেঁটে ইডি দফতরে রাহুল গান্ধী, পিছনে কংগ্রেসের মিছিল, ধুন্ধুমার দিল্লির পাওয়ার করিডর
গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদী একাধিক বার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের উদ্দেশে সুইস ব্যাঙ্কে গচ্ছিত কালো টাকা ফেরত আনার দাবি তুলতেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে সুইস ব্যাঙ্কে জমা কালো টাকা দেশে ফেরত আনারও। যদিও তা হয়নি। উল্টে ফান্ড, বন্ড, ডিবেঞ্চারের পাশাপাশি ভারতীয় অ্যাকাউন্টগুলিতে জমা পড়েছে ৪,৮০০ কোটি টাকা। যা গত সাত বছরের রেকর্ড।
এই যে জমার হিসেব বলা হচ্ছে এটা সরকারি হিসেবে। এর বাইরেও ডামি অ্যাকাউন্ট বা ডামি সংস্থার মাধ্যমে অনৈতিকভাবে বহু ভারতীয় সুইস ব্যাংকে টাকা রাখেন। আবার এদের বাইরে প্রবাসী ভারতীয়রা বৈধ ভাবেও সেখানে টাকা রাখেন। সুতরাং এই হিসেব দেখে কালো টাকার (Black Money) পরিমাণ জানা অসম্ভব। তবে, সুইস ব্যাংকে কোন কোন ভারতীয়দের অ্যাকাউন্ট আছে, কারা কারা কত অর্থ জমা রেখেছেন,সে হিসেব কেন্দ্রকে অনেক আগেই তুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।