লড়াই শেষ পর্যন্ত ত্রিমুখীই হল। কিন্তু ত্রিপুরার বিধানসভা ভোটে কার্যত অস্তিত্বহীন হয়ে গেল তৃণমূল। মোট ৬০ আসনের ত্রিপুরা বিধানসভায় ২৮টিতে প্রার্থী দিয়ে ত্রিপুরায় লড়তে নেমেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ফল বলছে, সামগ্রিক ভাবে নোটার (নান অফ দ্য অ্যাবভ অর্থাৎ ভোটযন্ত্রে নাম-থাকা উপরের কাউকেই নয়) চেয়েও কম ভোট পেয়েছেন জোড়াফুল প্রতীকের প্রার্থীরা!
বিজেপি এখনও ২২টি আসনে জিতেছে ত্রিপুরায়। ১১টিতে এগিয়ে গেরুয়া শিবির। সিপিএম ৬টি আসনে জয়ী, এগিয়ে আরও পাঁচটি আসনে। কংগ্রেস দু’টি আসনে জয়ী, এগিয়ে ১টি আসনে। তিপ্রা মোতা জয়ী ১২টি আসনে, এগিয়ে তিনটি আসনে। তৃণমূলের ঘর শূন্য। এই হাল দেখে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না ত্রিপুরা (Tripura) বিজেপির সহ সভাপতি রথীন্দ্র বোস। টুইটে লিখেছেন, “ত্রিপুরায় নোটার থেকেও কম ভোট পাওয়ার জন্য তৃণমূলকে নৈতিক জয়ের শুভেচ্ছা। মনে হচ্ছে প্রার্থীরা নিজেরাও তৃণমূলকে ভোট দেয়নি। সমবেদনা জানাতে একটি ফুটবল ও হুইল চেয়ার দিতে হবে।” তবে তিনি এখানেই থামেননি। এরপরও অনুব্রত-র দিল্লিতে যাওয়া নিয়ে ফের তৃণমূলকে তোপ দেগে লেখেন, “কী দুষ্টু। ত্রিপুরাও পেলো না, মেঘালয় গেলো। এবার বীরভূমের বীর অনু আজকে দিল্লি চলে যাচ্ছে। তিহার জেলে ইডির সঙ্গে জল খাবে।”
এদিকে তৃণমূলকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তিনি ফেসবুকে পোস্ট করে লেখেন, “মা ত্রিপুরেশ্বরীর আশীর্বাদে ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচনে নোটার কাছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে পরাজিত হল সর্বভারতীয় তোলামুল পার্টি।”
২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে ২৪টি আসনে প্রার্থী দিয়ে সাকুল্যে ৬,৯৮৯ ভোট পেয়েছিল তৃণমূল। শতাংশের হিসাবে ০.৩। এ বার ২৮টি আসনে লড়ে প্রাপ্তির ঝুলিতে ২১ হাজারের কিছু বেশি ভোট। শতাংশের হিসেবে প্রায় ০.৯। তবে এই ফলাফলের জন্য তৃণমূল সম্ভবত তৈরিই ছিল। ত্রিপুরায় প্রচারে গিয়ে মমতা প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, ‘‘অভিষেক (বন্দ্যোপাধ্যায়) আমাকে এখানে প্রচারে আসতে বারণ করেছিল। বলেছিল, দিদি, তুমি গিয়ে আর কী করবে! ওখানে ওরা সব নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছে।’’
মমতা তবুও প্রচারে গিয়েছিলেন। প্রচারে গিয়েছিলেন অভিষেকও। ঘটনাচক্রে, একটি নির্বাচনী জনসভায় লোক কম হওয়ায় মঞ্চেই খানিক উষ্মাপ্রকাশ করেছিলেন মমতা। ফলে আবহ একটা তৈরিই ছিল। কিন্তু তৃণমূল যে নোটার চেয়েও কম ভোট পাবে, ততটা সম্ভবত দলের অধিকাংশ নেতাই ভাবেননি। তবে তাঁরা আনন্দিত বিজেপির আসনসংখ্যা আগের চেয়ে এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে যাওয়ায়।
আরও পড়ুন: Mukesh Ambani: দেশে এবং বিদেশে মুকেশ আম্বানিকে জেড প্লাস নিরাপত্তা দেওয়ার সুপ্রিম নির্দেশ