আচমকা ইস্তফা দিলেন ত্রিপুরার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। এক লাইনের চিঠি লিখে পাঠিয়ে দিলেন রাজ্যপালকে। বিপ্লব কেন এমন ভাবে পদ ছেড়ে দিলেন, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। তবে ঠিক কী কারণে ইস্তফা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। নিজের ইস্তফাপত্রে পদত্যাগের কোনও কারণও তিনি উল্লেখ করেননি। এক লাইনের ইস্তফাপত্রে বিপ্লব দেব আজ থেকেই তাঁর ইস্তফা গ্রাহ্য করতে অনুরোধ করেছেন।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহরে (HM Amit Shah) সঙ্গে বৈঠক করেন বিপ্লব দেবের (Tripura CM Biplab Kumar Deb)। সূত্রের খবর, সেখানেই তাঁকে ইস্তফা দিতে বলা হয়। এরপর শনিবার দুপুরে রাজ্যপালের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেন তিনি। যে সমস্ত রাজ্যে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হওয়া জোরদার হয়েছে, সেই সমস্ত রাজ্যে বারবার নেতৃত্ব বদলের কৌশল নিয়েছেন মোদী-শাহরা। কর্ণাটক, গুজরাট, উত্তরাখণ্ড, হিমাচলপ্রদেশ, অসম-এর জলজ্যান্ত উদাহরণ। আর কয়েক মাস পর ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোট। তার আগে বিজেপির এই পদক্ষেপ সেই কৌশলেরই পুনরাবৃত্তি বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
Tripura CM Biplab Kumar Deb says has submitted resignation to governor
— Press Trust of India (@PTI_News) May 14, 2022
আরও পড়ুন: Marital Rape: বৈবাহিক ধর্ষণ কি অপরাধ? হাইকোর্টে মিলল না স্পষ্ট উত্তর, সিদ্ধান্ত সেই সুপ্রিম কোর্টে?
ইস্তফার পর বিপ্লব দেব জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মার্গদর্শন অনুযায়ী এতদিন কাজ করে চলেছেন। তবে এবার দল তাঁকে সংগঠনের কাজে লাগাতে চায়। ত্রিপুরার (Tripura) বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “দল চাইছে ২০২৩ নির্বাচনের আগে সংগঠনের শক্তি বাড়াতে। দীর্ঘ সময় সরকারে থাকার জন্য সংগঠনের শক্তি বাড়ানোর দরকার। সংগঠন থাকলে তবেই সরকার থাকবে। তাই দল আমাকে সংগঠনে কাজে লাগাতে চাইছে।” বিপ্লবের কথায় এদিন কোথাও যেন আক্ষেপের সুর শোনা গেল। তিনি বললেন, “এতদিন প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে আমি কাজ করে এসেছি। আমি ত্রিপুরায় ন্যায় প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছি। এবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ইচ্ছাতেই সংগঠনের কাজ করব।”
Tripura Chief Minister Biplab Kumar Deb resigns.
(File pic) pic.twitter.com/1WqdEiQqYC
— ANI (@ANI) May 14, 2022
২০২৩ সালে ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন (Tripura Assembly Election)। তার ঠিক আগে আগে বিপ্লবের ইস্তফা বিজেপির ভাবমূর্তিকে কিছুটা হলেও ধাক্কা দিল। অনেকেই মনে করছেন বিপ্লবের ইস্তফার নেপথ্যে রয়েছে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বিশ্লেষকদের মতে, বিপ্লবের বিরুদ্ধে গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ জমা হচ্ছিল, তাতে তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরাগভাজন হচ্ছিলেন। তাছাড়া, প্রশাসনের বিভিন্ন প্যারামিটারেও বিপ্লবের ত্রিপুরা সরকার ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছিল। মাত্র ৪ বছরেই ত্রিপুরা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছিল। সম্ভবত সেকারণেই বিধানসভা ভোটের আগে মুখ বদল করল গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন: Narendra Modi: মার্গদর্শক হতে নারাজ, চব্বিশের ভোটের পরেও প্রধানমন্ত্রী থাকতে চান মোদী