বিরোধীদের আপত্তি উপেক্ষা করে রাজ্যসভায় পাশ হয়ে গেল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল (Uniform Civil Code)। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের তৃতীয় দিনে রাজ্যসভায় একটি ব্যক্তিগত সদস্য বিল হিসেবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল ২০২০ পেশ করেন বিজেপি সাংসদ কিরোডি লাল মিনা (Kirodi Lal Meena)। বিরোধীরা আপত্তি তোলেন। শুরু হয় হই হল্লা। তার মধ্যেই ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে যায় বিলটি। বিরোধীরা বিলটিকে আটকে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের কাছে। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধির অর্থ হল, সকল ধর্মের ব্যক্তিদের জন্য একটিই আইন বলবৎ হবে। ধর্মের ভিত্তিতে কোনও আলাদা আইন প্রযোজ্য হবে না। এই বিলের বিরোধিতায় তিনটি প্রস্তাবও উত্থাপন করা হয় রাজ্য সভায়। সেই প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, এই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর হলে তা দেশের অখণ্ডতাকে বিঘ্নিত করবে এবং দেশের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতিকেও আঘাত করবে এই বিল।
লাইভ ল অনুযায়ী এক সাংসদ যুক্তি দিয়েছেন, ভারতের নাগরিকের উপর এই বিলের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। তাই জনসাধারণের সঙ্গে পরামর্শ না করে এই বিল পেশ করা যায় না। এদিকে সিপিএম সাংসদ জন ব্রিট্টাস আইন কমিশনের একটি রিপোর্টের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, অভিন্ন দেওয়ানি বিধির কোনও প্রয়োজন নেই। এদিকে ডিএমকে-র তিরুচি শিবা বলেছেন, ধর্মনিরপেক্ষতার বিরোধী এই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। এছাড়াও একাধিক বিরোধী নেতা এই বিলের বিরোধিতায় সরব হন।
আরও পড়ুন: Himachal Pradesh Exit Poll 2022: কংগ্রেস – বিজেপির কাঁটায় কাঁটায় টক্কর, পাল্লা ভারী কার দিকে?
তখন বলতে ওঠেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। তিনি বিরোধীদের আক্রমণ করে বলেন, ‘‘অধিবেশন এটা নিয়ে আলোচনা হোক। এই অবস্থায় সরকারের সমালোচনা এবং বিলের বিরোধিতার কোনও অর্থ হয় না।’’ এর পরই চেয়ারম্যান ধনখড় ধ্বনি ভোট করান। তাতে বিলের পক্ষে ৬৩ জনের সমর্থন আসে, বিপক্ষে ২৩। পাশ হয়ে যায় বিলটি।
অতীতে, এই বিলটি পেশ করার জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছিল। কিন্তু সংসদের উচ্চকক্ষ, রাজ্যসভায় পেশ হয়নি। এ বার তা পাশও হয়ে গেল উচ্চকক্ষে। উল্লেখ্য, গুজরাট নির্বাচনে বিজেপির ইস্তেহারে সেই রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আর সে রাজ্যে বিজেপির ঐতিহাসিক জয়ের পরের দিনই রাজ্যসভায় এই বিল উত্থাপন করা হল। এদিকে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও বিজেপির ইস্তেহারে এই অভিন্ন দেওয়ানি বিধির উল্লেখ ছিল।
৭ ডিসেম্বর শুরু হয়েছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। আগামী ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত তা চলবে।
আরও পড়ুন: Himachal : দেবভূমিতে কংগ্রেস, আদৌ কি সরকার থাকবে ‘হাত’ এর মুঠোয়