উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) আমজনতাকে ফের প্রবল সংকটের মুখে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল যোগী সরকারের বিরুদ্ধে। বিনামূল্যের রেশন তো দূর, ঢালাও রেশন কার্ড বাতিলের ঘোষণা করল সে রাজ্যের সরকার। ভোটের মুখে দফায় দফায় দেশজুড়ে বিনামূল্যে রেশনের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। উত্তরপ্রদেশের জন্য আলাদা করে রেশনে ঢালাও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। অভিযোগ, ভোট মিটতেই এখন নখ-দাঁত বের করেছে সরকার। যা নিয়ে প্রবল ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে আমজনতার মধ্যে।
যাঁরা জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনে রেশন পাওয়ার যোগ্য নন, অথচ রেশন পেয়েছেন, তাঁদের থেকে উত্তরপ্রদেশ সরকার রেশনের মূল্য উসুল করতে নেমেছে। উত্তরপ্রদেশ সরকার নির্দেশিকায় বলেছে, খাদ্য সুরক্ষা আইনে বাড়িতে মোটরবাইক, পাকা ছাদ-সহ পাকা বাড়ির মতো বেশ কিছু শর্ত রয়েছে, যা থাকলে কম দামে রেশন মেলার কথা নয়। সেই শর্ত লঙ্ঘন করে অনেকেই রেশন কার্ডে কম দামে রেশন তুলেছেন। কোভিডের সময় বিনামূল্যে বাড়তি রেশনও নিয়েছেন। তাঁদের রেশন কার্ড ফেরত দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাম মন্দির মামলায় ছিলেন হিন্দু পক্ষে, জ্ঞানবাপী মামলায় বিচারপতি তিনি
বিরোধী শিবির তো বটেই, বিজেপির মধ্যে থেকেই এর বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠেছে। বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধী বলেন, ‘‘নির্বাচনের আগে রেশন পাওয়ার যোগ্য, নির্বাচনের পরে রেশন পাওয়ার অযোগ্য? এইসব মাপকাঠি যদি নির্বাচন দেখে ঠিক করা হয়, তা হলে সরকার নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলবে। রেশনকার্ড খোয়ানো মানুষের কথা ফের কবে মনে আসবে? বোধহয় পরের নির্বাচন এলে।’’
কংগ্রেসও এ নিয়ে সরব হয়েছে। দলের মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে বলেন, ‘‘যদি ভুল করে কেউ রেশনকার্ড পেয়ে থাকেন, তার দায় সরকারি অফিসারদের উপরে বর্তাবে না কেন!’’ সুপ্রিয়ার অভিযোগ, যাঁরা রেশন পেয়েছেন, তাঁদের থেকে ২৪ টাকা কেজি দরে গম, ৩২ টাকা কেজি চালের দাম উসুল করা হবে। ডাল, ভোজ্য তেল, নুনের দাম বাজার দরে হিসাব করে নিয়ে নেওয়া হবে। গরিব মানুষরা টাকা ফেরত দিতে না পারলে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে বলেও উত্তরপ্রদেশ সরকার নির্দেশিকা জারি করেছে।
উত্তরপ্রদেশের জনসংখ্যা ২৩ কোটির কাছাকাছি। তার মধ্যে রেশন গ্রাহকের সংখ্যা ১৫ কোটি। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন বা এনএফএসএ’র আওতাভুক্ত গ্রাহকরাই সেখানে রেশনে চাল আর গম পান। বাংলার মতো সে রাজ্যের সরকার কার্ডহীন কোনও ব্যক্তিকে কিছু দেয় না। অন্ত্যোদয় কার্ডপিছু সে রাজ্যে প্রতি মাসে দেওয়া হয় ১৫ কিলো চাল ও ২০ কিলো গম। পিএইচএইচ কার্ডে একটি পরিবারে মাথাপিছু মেলে তিন কিলো গম আর দুই কিলো চাল। কখনও সখনও পাম তেল। সে রাজ্যে ভোটের মুখে তিন মাসের জন্য এক কিলো করে ছোলা আর নুন দেওয়া হয়েছিল। ভোট মিটতে সে সবকিছুতেই দাঁড়ি পড়তে চলেছে।
কেন্দ্র সরকার প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনায় বিনামূল্যের রেশন বন্ধ করে দেওয়ার পথে হাঁটতে পারে বলে ইতিমধ্যে শাসানি দিয়ে রেখেছে।গমের পরিমাণও কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার দায় রাজ্য সরকারের ঘাড়ে চাপানো হয়েছে। এই সংকটের পরিস্থিতিতে আরও এক বিপর্যয়ের মুখে জনতাকে দাঁড় করিয়ে দিল যোগী (Yogi Adityanath) সরকার।
আরও পড়ুন: LPG Cylinder Prices: রান্নার গ্যাসে সিলিন্ডারপিছু ২০০ টাকা ভর্তুকির, ঘোষণা কেন্দ্রের, তবে..!