নতুন সংসদ ভবনের মাথায় বসানো হবে জাতীয় প্রতীক অশোক স্তম্ভ। সোমবার তার আবরণ উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রায় সাড়ে বারোশো কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ন’হাজার কেজি ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ওই সাড়ে ছ’মিটার উচ্চ ওই অশোক স্তম্ভটি। সংসদ ভবনের উপর জাতীয় প্রতীক বসানো হবে। প্রতীকটি নীচ থেকে ধরে রাখা জন্য একটি ইস্পাতের কাঠামোও তৈরি করা হয়েছে, যার ওজন প্রায় সাড়ে ছ’হাজার কেজি।
দীর্ঘদিন ধরে এই অশোক স্তম্ভ নির্মাণের পরিকল্পনা চলছিল। ভাবনার স্কেচ এবং তৈরির প্রক্রিয়া নিয়ে ধাপে ধাপে পর্যালোচনা হয়েছে। আটটি আলাদা ধাপে এই নির্মাণটি সম্পূর্ণ হয়েছে। প্রথমে মাটির মূর্তি তৈরি থেকে কম্পিউটার গ্রাফিক্স তার পর সেটির উপর ব্রোঞ্জের আস্তরণ এবং পালিশ সব কিছু দীর্ঘ সময় ধরে হয়েছে। এদিন নির্মাণ কর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতা করেন প্রধানমন্ত্রী। কীভাবে এত বড় মূর্তি তৈরি হল তা জানতে চান। কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পেরে খুব খুশি।
আরও পড়ুন: LPG Cylinder Price Hike: ফের বাড়ল ঘরোয়া রান্নার গ্যাসের দাম! জানুন কলকাতায় LPG -র নয়া দর
সোমবার জাতীয় প্রতীকের আবরণ উন্মোচনের পর পুজোপাঠেও অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অংশ নিয়েছিলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ, কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী।
এই সুবিশাল অশোক স্তম্ভের উদ্বোধনের পর শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। কটাক্ষ করেছেন সীতারাম ইয়েচুরি থেকে আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি বলেন, “সংবিধানই সংসদ, সরকার এবং বিচারবিভাগীয় ব্যবস্থার মধ্যে সীমারেখা তৈরি করেছে। সরকারের প্রধান হিসাবে মোদীর নতুন সংসদ ভবনের জন্য তৈরি জাতীয় প্রতীকের উদ্বোধন করা উচিত হয়নি। এই উদ্বোধন করা উচিত ছিল লোকসভার স্পিকারের। তা হলে প্রশাসন এবং সংসদের পার্থক্য বজায় থাকত। এ ক্ষেত্রে সংবিধানের নীতি লঙ্ঘন করা হয়েছে।”
সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরিরও একই কথা বলেন। তাঁর কথায়, “সংবিধান গণতন্ত্রের তিনটি ব্যবস্থাকে পৃথক করেছে। রাষ্ট্রপতি সংসদের অধিবেশন ডাকেন আর প্রধানমন্ত্রী সরকারের প্রধান। ফলে প্রধানমন্ত্রী সংসদ ভবনের জন্য তৈরি জাতীয় প্রতীকের উদ্বোধন করায় স্পষ্টতই সংবিধান লঙ্ঘন হয়েছে।’’
প্রধানমন্ত্রী নতুন জাতীয় প্রতীক উন্মোচন উপলক্ষে পুজো করেন। যা নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ, সংবিধান সব ভারতীয়কে তাঁদের ধর্মাচরণের অধিকার দিয়েছে। পাশাপাশি, সংবিধানে এ কথাও বলা আছে যে, সরকারের বা রাষ্ট্রের কোনও একটি বিশেষ ধর্মের প্রচার বা পক্ষপাতের অধিকার নেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সেটা ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ তাদের।
আরও পড়ুন: Gujarat: ভয় ধরেছে গুজরাটের বন্যা, একদিনে মৃত ৭, সাহায্যের আশ্বাস নমোর