কবে মহিলারা সংসদে বা বিধানসভায় ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ পাবেন তা নিয়ে বিতর্ক জিইয়ে রেখেই লোকসভায় পাস হয়ে গেল মহিলা সংরক্ষণ বিল বা নারী শক্তি বন্দন অধিনিয়ম। বুধবার সংসদের নিম্ন কক্ষে বিরোধীদের নিরঙ্কুশ সমর্থনে বিলটি পাশ হয়ে যায়। বিলটির পক্ষে ভোট দেন ৪৫৪ জন সাংসদ। বিপক্ষে ভোট দেন মাত্র দু’জন।
লোকসভা এবং বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভায় এক তৃতীয়াংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের জন্য মঙ্গলবার পুরোদস্তুর নতুন বিল পেশ করেছিল মোদী সরকার। যার পোশাকি নাম, ‘নারী শক্তি বন্দন অধিনিয়ম’। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল ১২৮তম সংবিধান সংশোধনী বিল হিসাবে তা লোকসভায় পেশ করেন। দীর্ঘ ২৭ বছর পরে অবশেষে সংসদের নিম্নকক্ষ স্বীকৃতি দিল মহিলা সংরক্ষণের দাবিকে। এর পর প্রথামাফিক রাজ্যসভায় পাশ করিয়ে বিলটিকে রাষ্ট্রপতির কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। রাষ্ট্রপতির ছাড়পত্র পেলে কার্যকর হবে মহিলাদের জন্য লোকসভা-বিধানসভায় আসন সংরক্ষণ।
আরও পড়ুন: Bihar: ৩০ স্কুলপড়ুয়াকে নিয়ে ডুবে গেল নৌকা, নিখোঁজ ১৮ শিশু
কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে মহ্গলবার তাঁর বক্তৃতায় মহিলা বিল পেশের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘২০১০ সালে মনমোহন সিংহ প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন মহিলা সংরক্ষণ বিল সংসদের এই কক্ষে পাশ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এরা (মোদী সরকার) আমাদের কৃতিত্ব দিতে চায় না।’’ অন্য দিকে, লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী বিল পেশের সময় জানান, ১৩ বছর আগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের আমলেই মহিলা বিল সংসদের উচ্চকক্ষে পাশ হয়ে গিয়েছিল। ‘জবাবে’ মোদী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘‘সেই সরকারের আর অস্তিত্ব নেই। বিলটির মেয়াদও শেষ হয়ে গিয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, সংসদ অধিবেশন শুরু হওয়ার আগের দিন রবিবার প্রথামাফিক ডাকা সর্বদল বৈঠকে মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে কোনও কথা জানায়নি কেন্দ্র। এমনকি, মঙ্গলবারের আলোচ্যসূচিতেও প্রথমে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অধিবেশন শুরুর পরে ‘সাপ্লিমেন্টরি লিস্ট অফ বিজনেস’-এ ১২৮তম সংবিধান সংশোধনী বিল হিসাবে মহিলা সংরক্ষণের বিলটি পেশ করার কথা জানানো হয়েছিল।
২০২৭ সালের আদমসুমারি প্রক্রিয়া শেষের পরেই বিল কার্যকরের কথা বিলের প্রস্তাব রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বিল ২০২৯ সালের আগে কার্যকরের সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই ধারণা সংবিধান বিশেষজ্ঞদের একাংশের। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ মঙ্গলবার বলেন, ‘‘এই বিল মোদী সরকারের নির্বাচনী চমক ছাড়া আর কিছু নয়। কারণ, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে জনসুমারি বা আসন পুনর্বিন্যাস, কোনওটাই হবে না।’’
আরও পড়ুন: Womens Reservation: শুধুই ভোট চমক! আইনে পরিণত হলেও মহিলা সংরক্ষণ চালু হতে বহু দেরি, কারণ জানুন