সন্দেশখালি ইস্যুতে শুভেন্দু অধিকারীর ‘খলিস্তানি’ মন্তব্যের জেরে চাপে পড়ে গিয়েছে বিজেপি। ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজ্য সফরে আসার কথা ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। ২৯ ফেব্রুয়ারি মায়াপুরের ইস্কন মন্দিরে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। তবে বিজেপি সূত্রে খবর, এখন পশ্চিমবঙ্গে আসছেন না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এর আগে নভেম্বর এবং ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বাংলায় এসেছেন অমিত শাহ। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে আসার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়ে যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর। বাতিল হল ফেব্রুয়ারির সফরও। সব কিছু ঠিক থাকার পরেও হঠাৎ কেন বাতিল হল শাহের সফর, তা নিয়ে বিশেষ মুখ খুলতে চাইছেন না রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।
দলের একাংশ মনে করছে, শুভেন্দুর ‘খালিস্তানি’ মন্তব্যের জেরে বিজেপির বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ সারা দেশের পাশাপাশি কলকাতাতেও দানা বেঁধেছে সে কারণেই শাহর কলকাতায় আসা বাতিল হয়েছে। কলকাতায় বিজেপির রাজ্য দফতরের সামনে টানা বিক্ষোভ চালাচ্ছে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন।শুভেন্দু অধিকারীর গ্রেপ্তারের দাবি উঠেছে।পরিস্থিতি ঠান্ডা হলে তারপর অমিত শাহ আসবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
সন্দেশখালি ইস্যুতে তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। সন্দেশখালি নিয়ে বিজেপি বিভাজনের রাজনীতি করতে চাইছে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি মঙ্গলবার সন্দেশখালি গিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘খলিস্তানি’ মন্তব্য নিয়ে ঘরে-বাইরে চাপের মুখে বিজেপি। শুভেন্দু নিজেও ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়েছেন। সূত্রের খবর, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে যে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে তা মেনে নিতে পারছে না গেরুয়া শিবিরের বড় অংশই। যেভাবে শিখ সম্প্রদায় গর্জে উঠেছে তাতে অস্বস্তিতে দিল্লির নেতারাও। এই ‘খলিস্তানি’ মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পাশাপাশি শুভেন্দুর পাশে থাকার বার্তাও দেননি সুকান্ত। বিজেপির রাজ্য সভাপতির এই নীরবতাই বুঝিয়ে দিচ্ছে বিরোধী দলনেতার এইধরণের মন্তব্য দল সমর্থন করছে না।
যদিও বিজেপির দাবি, ৬ মার্চ নরেন্দ্র মোদী আসছেন। তাই প্রধানমন্ত্রী আসার কয়েকদিন আগে আর অমিত শাহ আসবেন না। সেই সঙ্গে বিজেপির তরফ থেকে বলা হচ্ছে, সন্দেশখালিকাণ্ডের জেরেই রাজ্য সফর আপাতত স্থগিত রাখলেন শাহ।নির্দিষ্ট একটি পরিধিতে বেঁধে না-রেখে প্রশাসনের সঙ্গে সংঘাতে গিয়ে সন্দেশখালির আন্দোলনকে ‘জঙ্গি’ আন্দোলনে পরিণত করতে চাইছে বিজেপি। সন্দেশখালির আন্দোলনকে বৃহত্তর করে তুলতে প্রায় প্রতিদিনই রাস্তায় নামছেন তাঁরা। তাই এই সময় শাহ যদি রাজ্য সফরে আসেন, তা হলে তাঁকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যেতে হবে রাজ্য নেতৃত্বকে। ফলে তাঁদের আন্দোলনে ভাটা পড়তে পারে।