বাগুইআটি থেকে নিখোঁজ হওয়া দুই কিশোরের দেহ উদ্ধার হল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট থেকে। মঙ্গলবার সকালে ওই দুই ছাত্রের পরিবারের লোকজন তাদের দেহ শনাক্ত করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। বসিরহাট হাসপাতালের মর্গে গত প্রায় ১৩ দিন ধরে অশনাক্ত অবস্থায় ওই দেহ দু’টি পড়েছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই কিশোর বাগুইআটির হিন্দু বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। তাদের এক জনের নাম অভিষেক নস্কর (১৬) এবং অন্য জন অতনু দে (১৫)। তারা বিধাননগর পুরনিগমের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। গত ২২ অগস্ট থেকে তারা নিখোঁজ ছিল। বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার জোবি থমাস জানিয়েছেন, ২৩ অগস্ট সন্ধ্যায় ন্যাজাট থানা এলাকায় এক জনের দেহ উদ্ধার হয়। অন্য জনের দেহ ২৫ অগস্ট পাওয়া যায় মিনাখাঁ থানা এলাকায়। তাঁর কথায়, ‘‘২৩ অগস্ট এবং ২৫ অগস্ট ন্যাজাট এবং মিনাখাঁ থানা এলাকা থেকে দুই কিশোরের দেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের দেহ শনাক্ত করা যায়নি। আমরা বিভিন্ন থানায় বার্তা পাঠিয়েছিলাম। বাগুইআটি থানা জানায়, তাদের এলাকায় দুই ছাত্র নিখোঁজ। আজ দু’টি দেহ শনাক্ত হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: Durga Puja 2022: ক্ষমতা দখলের লড়াই! অনিশ্চিত বাগবাজার সর্বজনীন পুজোর ভবিষ্যৎ
বিধাননগরের গোয়েন্দা প্রধানের দাবি, ২৪ তারিখ অতনু এবং অভিষেকের পরিবারের তরফে একটি অভিযোগ করা হয়। সেখানে অপহরণের কথা লেখা হয়েছিল। তার পরেই বিভিন্ন থানায় খবর পাঠানো হয়। কিন্তু নিখোঁজ ছাত্র দু’জনের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যেই ওই দুই ছাত্রের পরিবারের কাছে মুক্তিপণের দাবি আসে। প্রথমে ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। পরে সেই অঙ্ক বাড়িয়ে করা হয় এক কোটি। যদিও বিশ্বজিতের দাবি, ওই দু’জনকে অপহরণ করা হয়েছিল খুনের লক্ষ্যে। মুক্তি পণের বিষয়টি ‘নাটক’।
বিধাননগর পুলিশের দাবি সোমবার এই ঘটনায় অভিজিৎ বসু নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে দীর্ঘ ক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তিন জনের হদিস পাওয়া যায়। তাঁরা হলেন শামিম আলি, শাহিন মোল্লা এবং দিব্যেন্দু দাস। তাঁদেরকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, অভিজিতের কাছ থেকেই তারা জানতে পারে, ওই দুই ছাত্রকে খুন করা হয়েছে। তার পরেই বিভিন্ন থানায় জানতে চাওয়া হয় অশনাক্ত অবস্থায় মর্গে কোনও দেহ আছে কি না!
এর পর জানা যায়, বসিরহাটের মর্গে তিনটে অশনাক্ত দেহ রয়েছে। মঙ্গলবার সকালেই অতনুর পরিবারের তরফে দেহ শনাক্ত করা হয়। বিধাননগরের গোয়েন্দা প্রধানের দাবি, অভিষেকের দেহ মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত শনাক্ত হয়নি।