চাঁদা নিতে এসে এক ক্যাফের মালিককে হেনস্থার অভিযোগ উঠল। কলকাতার যোধপুর পার্ক এলাকায় বুধবার রাতের ওই ঘটনার পরেই লেক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ক্যাফে-মালিক স্বরলিপি চট্টোপাধ্যায়। এর জেরেই আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ‘যোধপুর পার্ক উৎসব’। স্বরলিপির করা অভিযোগের ভিত্তিতে মূল অভিযুক্ত-সহ পাঁচ জনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
যুবতীর অভিযোগ, বেশকিছু দিন ধরেই একদল যুবক ‘যোধপুর পার্ক উৎসব’- এর চাঁদা বাবদ টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু ওই তরুণী সেই টাকা দিতে চাননি। অভিযোগ, এরপরই বুধবার রাতে আচমকাই তাঁক যোধপুর পার্কের (Jodhpur Park) কফিশপে ১০-১২ জন যুবক এসে চড়াও হন। অভিযোগকারী জানান, প্রথমেই ওই যুবকরা তাঁর হাত থেকে মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন। শুরু হয় টাকার জন্য জোর জবরদস্তি। অভিযোগ, টাকা না দিলে কফি শপে ভাঙচুর চালানোর হুমকিও দেয় ওই যুবকরা। এমনকী অভিযোগকারী তরুণীকে প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপরই বুধবার রাতে লেক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই তরুণী। এদিকে থানা থেকে বেরোতেই ওই তরুণীকে ফের ওই যুবকেরা ঘিরে ধরে। এরপর লেক থানায় ফোন করলে পুলিশ এসে ওই তরুণী ও তাঁর বন্ধুদের উদ্ধার করে।
ওই ঘটনার পরেই লেক থানায় উৎসবের অন্যতম উদ্যোক্তা বিজয় দত্ত-সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন স্বরলিপি। তিনি জানান, অভিযোগ দায়ের করে থানা থেকে ফেরার পথে দু’জন তাঁর পিছু নেয়। তাঁর কথায়, ‘‘আমি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। একে তোলাবাজি ছাড়া আর কী বলব! ওঁরা যা টাকা চেয়েছিলেন, অত টাকা দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। তার পরেও জোরজুলুম। থানা থেকে ফেরার পথেও পিছু নিয়েছিলেন দু’জন। ভয়ে ভয়ে বাড়ি ফিরেছিলাম।’’ স্বরলিপি জানিয়েছেন, তিনি সিঙ্গল মাদার এবং একাই ওই ক্যাফে চালান। পাঁচ বছরের একটি সন্তান রয়েছে তাঁর।
আরও পড়ুন: নিজে হাতে কিনলেন লাল বেনারসি! আজ বিকেলেই দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে মদন মিত্র
বুধবার ঘটনার সময় ওই ক্যাফেতেই উপস্থিত ছিলেন সুমিতা সামন্ত নামে এক জন। এই ঘটনাটি নিয়ে মূল ফেসবুক পোস্টটি তিনিই করেন। ওই পোস্টে সুমিতা জানান, যাঁরা চাঁদা চাইতে এসেছিলেন, তাঁরা কলকাতা পুরসভার স্থানীয় ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের অনুগামী। ফেসবুক পোস্টে স্থানীয় কাউন্সিলরের নাম উঠে আসায় প্রশ্নের মুখে পড়েন মৌসুমি দাস। তিনি সদ্য নির্বাচিত হয়েছেন ওই ওয়ার্ড থেকে। মৌসুমি বলেন, ‘‘ওটা স্থানীয় ৯৫ পল্লি ক্লাবের নিজস্ব উৎসব। আমি ওঁদের সঙ্গে যুক্ত নই। উৎসব কমিটির লোকেরা টাকা তুলতে গিয়েছিলেন বলে শুনেছি। আমি উৎসব কমিটিতেও নেই। এই ঘটনা নিন্দনীয়। আমি কোনও ভাবেই সমর্থন করি না। স্থানীয় বিধায়ক দেবাশিষ কুমারের নির্দেশে এই উৎসব আপাতত হচ্ছে না।’’
বুধবার রাতেই মহিলা কমিশনে গোটা বিষয়টি জানিয়েছেন স্বরলিপি। তাঁকে থানায় এ নিয়ে অভিযোগ দায়েরের পরামর্শ দিয়েছেন কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এই ঘটনার নিন্দা করছি। কলকাতা মহিলাদের জন্য নিরাপদ শহর। এখানে এই সব অভিযোগ কোনও দিনই সহ্য করা হবে না।’’
আরও পড়ুন: Sandhya Mukherjee Last Rites: পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য, সুরলোকে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়