অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Gangopadhyay) এফআইআর মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। মঙ্গলবার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মামলা থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। নিয়ম অনুযায়ী এবার কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি সিদ্ধান্ত নেবেন, মামলাটি কোন বিচারপতি শুনবেন।
গত শনিবার রোড শো করে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময়ে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে চাকরিহারাদের ধর্নামঞ্চ থেকে ‘চোর’ স্লোগান দেওয়া হয়। পাল্টা বিজেপি কর্মীরাও স্লোগান দেয়। এরপরই দু’পক্ষের মধ্যে কার্যত হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। এই ঘটনায় অভিজিতের বিরুদ্ধে তমলুক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে তৃণমূল শিক্ষক সংগঠন। অভিজিতের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, মহিলাদের সম্ভ্রমহানি, মারধর সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এই মামলার বিরুদ্ধেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তমলুকের বিজেপি প্রার্থী।
তাঁকে মামলা দায়ের করার অনুমতি দেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। মঙ্গলবার মামলার শুনানি ছিল। এদিনই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন জয় সেনগুপ্ত। বিচারপতির সরে দাঁড়ানোর ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য এই প্রসঙ্গে বলেন, ”বিচারপতি মনে করেছেন তিনি যদি মামলা লড়েন তাহলে অসুবিধা হতে পারে। এই বিষয়ে আলাদা কোনও বক্তব্য নেই। তবে একটাই কথা বলতে চাই, জুডিশিয়ারি কী পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেলে কোনও একজনের মামলা কে শুনবেন কী শুনবেন না, তা নিয়ে আলোচনা করতে হয়। এর মূল কারিগর ভারতীয় জনতা পার্টি। ভারতবর্ষের সবচেয়ে আস্থার যে জায়গা, তার গলা টিপে শেষ করে দিল ভাবতেও কষ্ট হয়।”
গত ৪ মে, শনিবার তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মনোনয়ন জমা দেন। তমলুকের রাজবাড়ি ময়দান থেকে বর্ণাঢ্য পদযাত্রা বেরয়। যার নেতৃত্বে ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দলীয় প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য নেতানেত্রীরাও তাতে অংশ নেন। হাসপাতাল মোড়ে মিছিল পৌঁছনোর পর ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে। কারণ, এই হাসপাতাল মোড় এলাকাতেই চাকরিহারাদের নিয়ে তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছিল। অভিযোগ ওঠে, অনশনরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর অতর্কিতে হামলা চালানো হয়। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারীর প্রত্যক্ষ প্ররোচনাতেই বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় বলেই অভিযোগ। তার পরদিন বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, ময়নার তিলখোজা এলাকার প্রশান্ত দাস-সহ অন্তত ৫০ জনের বিরুদ্ধে তমলুক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি মইদুল ইসলাম।