তমলুকের বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করল নির্বাচন কমিশন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে প্রকাশ্য সমাবেশে কুকথা বলার অভিযোগে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছিল তৃণমূল। তার পরিপ্রেক্ষিতেই পদক্ষেপ করল কমিশন। মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে ২৪ ঘণ্টার জন্য অভিজিতের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অর্থাৎ অভিজিৎ নিজে ওই সময় প্রচার করতে পারবেন না। ভবিষ্যতে জনসভায় এ ধরনের মন্তব্য করা থেকে তাঁকে বিরত থাকতেও সতর্ক করেছে কমিশন।
সম্প্রতি সন্দেশখালি সংক্রান্ত একাধিক ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। যার জেরে নির্বাচনী লড়াইতে কার্যত কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় বিজেপি। আর এই আবহেই তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুৎসিত ও অশ্রাব্য ভাষায় আক্রমণ করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাক্তন বিচারপতির সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয় তৃণমূল কংগ্রেস।
তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ জানান হয় তৃণমূল কংগ্রেসের এক্স হ্যান্ডেলে। বিজেপি প্রার্থী সমস্ত সীমারেখা লঙ্ঘন করেছেন বলেও অভিযোগ করে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তা বাংলার মহিলাদের অপমানের সামিল বলেও দাবি করা হয় তৃণমূলের পক্ষ থেকে। আর সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অবিলম্বে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজাও। এই বিষয়ে মন্ত্রী শশী পাঁজা লেখেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর কত দাম, এমন কথা বলার আপনাকে সাহস কে দিল? একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী এবং জননেত্রী ভারতের। এটা আমার কল্পনার বাইরে। লজ্জা করে না। দ্রুত ক্ষমা চান।’
এই নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য। তিনি লিখেছেন, ‘‘বিজেপিতে সকলেই শুভেন্দু অধিকারী। মুখ খুললেই নর্দমা।’’
একজন প্রাক্তন বিচারপতি যিনি বিজেপির আকালের বাজারে তাদের বাঙালি-ভদ্রলোক মুখ হতে চেয়েছিলেন, তিনি তার জীবনের প্রথম নির্বাচনেই কেবল কুকথার জন্য শাস্তি পেলেন! বিজেপির কপালটাই পোড়া!
আসলে বিজেপিতে সবাই শুভেন্দু অধিকারী। মুখ খুললেই নর্দমা! কারোর গন্ধ আগে বেরোয়, কারোর একটু পরে..
— Debangshu Bhattacharya Dev (@ItsYourDev) May 21, 2024
বিজেপির দাবি, তৃণমূল অভিজিতের বক্তব্যকে ভুল ভাবে উপস্থাপিত করেছে। তাঁর মতো উচ্চশিক্ষিত মানুষ কোনও মহিলাকে আক্রমণ করতে পারেন না।অন্যদিকে, এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিজেপি প্রার্থীর দাবি, এই সিদ্ধান্তের আগে তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। নির্দেশ পুনর্বিবেচনার জন্য কমিশনে আর্জি জানাবেন অভিজিৎ। প্রাক্তন বিচারপতি বলেন, ‘‘আমি কমিশনকে জবাব দিতে গিয়ে বলেছিলাম, যদি কোনও পদক্ষেপ করা হয়, তার আগে যেন অতিরিক্ত জবাব (সাপ্লিমেন্টরি রিপ্লাই) দেওয়ার সুযোগ থাকে। কিন্তু কোনও সুযোগ না দিয়েই কমিশন এই নির্দেশ দিয়েছে।’’ অভিজিৎ আরও বলেন, ‘‘অন্য লোকের মান আছে, রেখা পাত্রের মান নেই, আমার মান নেই, তা তো হতে পারে না!’’ একই সঙ্গে বলেন, ‘‘দরকারে কমিশনের এই নির্দেশ খারিজ করার আর্জি জানিয়ে আমি আদালতে যাব।’’