মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অশালীন আক্রমণের জেরে এবার বিপদ বাড়ল তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। তৃণমূলের তরফে অভিযোগ দায়ের করার পরই অভিজিৎকে শোকজ করল নির্বাচন কমিশন। ২০ মে অর্থাৎ আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে এই শোকজ নোটিশে জবাব দিতে বলা হয়েছে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে।
বুধবার হলদিয়ার চৈতন্যপুরে একটি সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নাম করে আক্রমণ করেছিলেন অভিজিৎ। সেখানে অভিজিৎকে বলতে শোনা যায়, ‘‘তৃণমূল বলছে, রেখা পাত্রকে কেনা হয়েছিল ২০০০ টাকায়! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুমি কত টাকায় বিক্রি হও? তোমার হাতে কেউ ৮ লক্ষ টাকা গুঁজে দিলে চাকরি হয়, কেউ ১০ লক্ষ টাকা দিলে রেশন হাওয়া হয়ে যায়! কেন তোমার দাম ১০ লক্ষ টাকা? তুমি কেয়া শেঠকে দিয়ে মুখে মেকআপ করাও বলে? আর রেখা পাত্র গরিব মানুষ, লোকের বাড়িতে কাজ করে, আমাদের প্রার্থী। সে জন্য তাঁকে ২০০০ টাকায় কেনা যায়? এক জন মহিলা হয়ে উনি এক মহিলা সম্পর্কে এ কথা বলেন কী করে? উনি আদৌ মহিলা কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে আমার!’’
অভিজিতের এই মন্তব্যের উল্লেখ করে রাজ্যের শাসকদল তাঁর কড়া নিন্দা করে। অভিজিতের মন্তব্যের ইংরেজি তর্জমা-সহ কমিশনেও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল তৃণমূল। নির্বাচন কমিশনকে লেখা অভিযোগপত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ‘ভারতীয় দণ্ডবিধি লঙ্ঘন করায়’ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রুজু করা হোক। সেইসঙ্গে, দলের তরফে আরও দাবি করা হয়, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সবরকমের নির্বাচনী প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হোক। তিনি যেন কোনও জনসভা বা পদযাত্রা করতে না পারেন। পাশাপাশি, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়-সহ সমস্ত বিজেপি নেতা যেন এই ধরনের ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং আপত্তিকর ও অবমাননাকর মন্তব্য’ করা থেকে বিরত থাকেন সেটাও জানানো হয় চিঠিতে।
শুক্রবার সেই অভিযোগেরই জবাব এল কমিশনের কাছ থেকে। কমিশন জানিয়েছে, তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ ওই মন্তব্যে শুধু রুচিহীনতার পরিচয়ই দেননি, তিনি নির্বাচনের সময়ে জারি থাকা আদর্শ আচরণবিধিও লঙ্ঘন করেছেন।এই মর্মে কমিশন আগামী সোমবার, ২০ মে, বিকেল ৫টার মধ্যে অভিজিৎকে তাঁর ওই আচরণের কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছে। কমিশন জানতে চেয়েছে, কেন ওই মন্তব্যের জন্য অভিজিতের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে না? কমিশন এ-ও জানিয়েছে যে, যথা সময়ে অভিজিৎ যদি নোটিসের জবাব না দেন, তবে কমিশন ধরে নেবে এ ব্যাপারে তাঁর কিছু বলার নেই এবং পরবর্তী কালে তার ভিত্তিতেই অভিজিতের বিরুদ্ধে আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে পদক্ষেপ করা হবে।