সাংবাদিক সম্মেলনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একবারও নাম উচ্চারণ না করে ‘তালপাতার সেপাই’ বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি। এবার বিজেপি যোগ নিয়ে প্রাক্তন বিচারপতিকে পালটা দিলেন অভিষেক।
মঙ্গলবার ইকো পার্কে গিয়েছিলেন অভিষেক। পাশে ছিলেম মন্ত্রী সুজিত বসু এবং বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “রিড বিটুইন দ্য লাইন। উনি তাহলে এটা বললেন, ‘যখন আমি (অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়) এজলাসে বসেছি, তখন বিজেপি আমার (অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়) সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল। আমি (অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়) বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি।’ বাকিটা আমি জনগণের উপর ছেড়ে দিলাম।” সবমিলিয়ে বিজেপির সঙ্গে অভিজিতের যোগসাজশের তত্ত্বই আরেকবার সামনে আনার চেষ্টা করলেন তিনি। এর পরেই জানা গেল, সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন অভিষেক।
সন্ধ্যায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী সঞ্জয় বসু জানিয়ে দিলেন, এ বার গত দু’বছরে অভিজিতের দেওয়া বিভিন্ন রায়ের নেপথ্যে ‘অভিসন্ধি’র প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করা হবে।অভিষেকের আইনজীবী সঞ্জয় বলেন, ‘‘গত প্রায় দু’বছর ধরে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা মামলা স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে সিবিআই বা ইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্য প্রশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছেন তাঁর পর্যবেক্ষণে।’’ একই সঙ্গে সঞ্জয় বলেন, ‘‘এখন যখন তিনি আদালত ছেড়ে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন, তখন এটা স্পষ্ট যে, তিনি আইনের উপরে দাঁড়িয়ে নয়, নির্দেশ ও রায় দিয়েছেন একটি রাজনৈতিক দলকে লক্ষ্য করে। লোকসভা নির্বাচনের আগে আগে মিথ্যা এবং সাজানো মামলায় দল এবং দলের নেতাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন।’’
অভিষেকের আইনজীবী সঞ্জয়ের দাবি, ‘‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই যে এই সব করা হয়েছে, তা এখন স্পষ্ট হয়ে গেল অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় একটি রাজনৈতিক দলে যোগ দিচ্ছেন ঘোষণা করার পরে।’’ সেই সঙ্গেই সঞ্জয় জানিয়েছেন, ‘‘শীঘ্রই সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করা হবে। সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়া থেকে বিভিন্ন নির্দেশ— সবের আড়ালেই ছিল পরিকল্পিত রাজনৈতিক লক্ষ্য। তিনি নিজেই সেটা দিনের আলোয় এনে দিয়েছেন।’’
ওই আবেদনে এ-ও বলা হবে, যাতে গত দু’বছর ধরে বিভিন্ন মামলায় অভিজিৎ বিচারপতি হিসাবে যে যে রায় দিয়েছেন, সেগুলি আবার বিবেচনা করে দেখা হোক। সঞ্জয় বলেন, ‘‘শুধু অভিষেক নন, তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধেও শুরু হয়েছে তদন্ত। সিবিআই বা ইডির চালানো সেই সব তদন্তের উপরেও স্থগিতাদেশ চাওয়া হবে।’’