কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার প্রতিবাদে প্রায় গোটা অক্টোবর মাস জুড়েই আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২ তারিখ গান্ধী জয়ন্তী থেকে শুরু করে ৯ তারিখ পর্যন্ত দিল্লির রাজঘাট, যন্তর মন্তর, কৃষিভবন হয়ে কলকাতায় রাজভবনের সামনে শুরু হয় তাঁর আন্দোলন৷ গত মাসে এক নতুন রূপেই যেন ধরা দেন তৃণমূলের সেনাপতি৷ দেবীপক্ষের শুরুতেই ফের চমক! মহালয়ার বিকেলে কলকাতার নজরুল মঞ্চে চণ্ডীপাঠের সংস্কৃত স্তোত্র উচ্চারিত হল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে৷ যা শুনে উপস্থিত সকলেই খানিকটা হকচকিয়ে উঠলেন৷
অতীতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় একাধিকবার সংস্কৃত স্তোত্র উচ্চারিত হয়ে শোনা গিয়েছে। কিন্তু দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগে কোনও দিন প্রকাশ্য কর্মসূচিতে এমন স্তোত্রপাঠ করছেন বলে কেউ স্মরণ করতে পারছেন না! শনিবার দলের মুখপত্র জাগো বাংলার উৎসব সংখ্যা প্রকাশ অনুষ্ঠানে ধীরে এবং স্পষ্ট ভাবে তিনি পাঠ করলেন, ‘‘ইয়া দেবী সর্বভূতেষু…’’। দলের এক প্রবীণ নেতার কথায়, ঘরোয়া অনুষ্ঠানে এর আগেও স্তোত্রপাঠ করেছেন অভিষেক। তবে প্রকাশ্য এত বড় কর্মসূচিতে তিনি কোনও দিন এমনটা করেছেন বলে মনে পড়ছে না তাঁরও।
আরও পড়ুন: New Town: তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীকে গণধর্ষণের অভিযোগ, ধৃত তিন জনও তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থারই কর্মী
অন্যদিকে, অভিষেকের বক্তৃতাও ছিল নাতিদীর্ঘ। তবে তাতেও নাম না-করে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের সেনাপতি। অভিষেক বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেটা বলেছেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। সেটা বাংলা প্রমাণ করে দিয়েছে। যারা একসময় বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতিকে আক্রমণ করে বলত বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না। তাঁরাই এখন বাংলায় পুজো উদ্বোধন করতে আসছেন।”।
অমিত শাহ ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে একাধিক জনসভা থেকে দাবি করেছেন, এ রাজ্যে দুর্গাপুজো করতে চাইলেও তাতে বাধা দেওয়া হয়। হিন্দুদের স্বাধীনভাবে দুর্গাপুজো করার অধিকার পর্যন্ত নয়। অথচ ঘটনাচক্রে তিনিই এ বছরের শহরের একটি বড় দুর্গাপুজার উদ্বোধনে আসছেন। আগামী ১৬ অক্টোবর সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের পুজো উদ্বোধন করার কথা শাহের। অভিষেক এদিন সেই সফর নিয়েই নাম না করে শাহকে কটাক্ষ করলেন।
সেই সঙ্গে জাগো বাংলার ওই মঞ্চ থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তাও দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি রাজ্যবাসীর উদ্দেশে বলেন,”দুর্গাপুজোর কটা দিন জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে উৎসব উপভোগ করুন। বাংলার সংস্কৃতি, ধারা বজায় রাখুন। উপভোগ করুন। কিন্তু অন্যের নিরানন্দের কারণ যেন আমরা না হই।”