বঙ্গ সফরে এলেন, আবার ফিরেও গেলেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অমিত শাহ দেখা করলেন না আরজি করে নির্যাতিতার বাবা-মায়ের সঙ্গে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের জন্মদিনে তাঁকে ইমেল পাঠান আরজি করের নির্যাতিতার বাবা। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে নির্যাতিতার বাবা জানিয়েছিলেন, অত্যন্ত মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন তাঁরা। সে কারণেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান। প্রয়োজনে যে কোনও জায়গায় যেতে প্রস্তুত তাঁরা। পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, ‘মেয়ের উপর নারকীয় অত্যাচার ও মর্মান্তিক পরিণতির কারণে অত্যন্ত মানসিক যন্ত্রণায় রয়েছি। আমাদের অসহায় লাগছে।’
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সদস্য সংগ্রহ অভিযানে একদিনের সফরে এসেছিলেন অমিত শাহ। রাজ্য বিজেপির তরফে তাঁর সঙ্গে পানিহাটির পরিবারের সাক্ষাৎ করানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেই মর্মে শাহর কাছে ইমেলও পাঠান সুকান্ত, শুভেন্দুরা। পরিকল্পনা চলছিল, বঙ্গে একদিনের একাধিক কর্মসূচি থেকে কিছুটা সময় বের করে যদি আর জি করের নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের পরিবারের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দেখা করানো যায়। রবিবার সকাল পর্যন্তও অবশ্য সাক্ষাৎ নিয়ে চূড়ান্ত কোনও খবর পাওয়া যায়নি। বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষও ধোঁয়াশা জিইয়ে রেখেছিলেন।
সন্ধের পর অবশ্য শাহ-সাক্ষাতের আশায় ইতি পড়ে গেল। সূত্রের খবর, পরিবারের তরফে শাহর মন্ত্রকে মেল করা হলেও শেষ পর্যন্ত এনিয়ে কোনও জবাব আসেনি। তাতেই বোঝা যাচ্ছিল যে সাক্ষাৎ অনিশ্চিত। তা সত্ত্বেও বঙ্গ বিজেপির নেতাদের উপর ভরসা রেখেছিল পরিবার, যদি তাঁরা সময় বের করে দেখা করানোর ব্যবস্থা করতে পারেন। কিন্তু দিনশেষে নির্যাতিতার পরিবার আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ পর্যন্ত পৌঁছতে পারল না। যদিও এদিন পেট্রোপোল সীমান্তের ‘মৈত্রী দ্বার’ উদ্বোধন এবং ইজেডসিসির অনুষ্ঠানে শাহর বক্তব্যে ছিল আর জি কর ইস্যু।
এরপরেই তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘আমাদের ঘরের মেয়ের ধর্ষণ হয়েছে। হত্যা হয়েছে। তাঁর বাবা-মা অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গে এলেন। রাজনৈতিক কুৎসা করলেন, বিভ্রান্তি ছড়ালেন, অথচ নির্যাতিতার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করলেন না? আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। নারী নির্যাতন নিয়ে কোনও কথা বলার অধিকার অমিত শাহ-বিজেপির নেই। এদের জমানায় দেশে দিনে গড়ে ৯০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। সব জায়গায় কুৎসিত ঘটনা ঘটছে। তারা বাংলা নিয়ে কুৎসা করতে আসেন। একবার বাবা-মাকে সময় দিলেন না?’
তিনি আরও বলেন, ‘বাবা-মা জানেন এখন তদন্ত সিবিআই-এর হাতে। কলকাতা পুলিশ ২৪ ঘণ্টায় একজনকে অ্যারেস্ট করেছে। সিবিআই তদন্তে থাকাকালীন যদি বাবা-মা দেখা করতে চান, মানবিকার খাতিরেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উচিত ছিল তাঁদের সময় দেওয়া। অমানবিক আচরণ করেছেন শাহ।’