এবছর ভোট দিতে পারলেন না খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি হাওড়ার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার। সোমবার সকালেই ভোট দিতে গেছিলেন বাবুন। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম নেই। এতে ভোট না দিয়েই তাঁকে ফিরে আসতে হয়।
তৃণমূল সূত্রে খবর এই ঘটনার বিষয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে। কেন তার নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ গেল তাই কারণ কমিশনই বলতে পারবে বলে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে।
মধ্য হাওড়ার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার ভোট ছিল হাওড়ায়। সেই মতো এবেলা সাড়ে ১২টার সময়ে তিনি বুথে গিয়ে দেখেন, ভোটার তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে। কিন্তু নামের পাশে লেখা ‘ডিলিটেড’। অতঃপর ভোট না-দিয়েই বুথ থেকে ফিরতে হয় তাঁকে। যে ঘটনায় মর্মাহত বাবুন। বুথে পৌঁছতেই প্রিসাইডিং অফিসার তাঁকে জানিয়ে দেন, ‘ডিলিটেড’ অর্থাৎ ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়েছে।
এর পরই হতাশা উগড়ে দেন তিনি। মমতার ভাই বলেন, ‘‘হাওড়ায় নাম তোলার পর এটাই ছিল আমার প্রথম ভোট। কিন্তু তা আমি দিতে পারলাম না। এই ঘটনায় আমি মর্মাহত।’’ বাবুন কাউকে দায়ী করেননি। তবে তিনি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, তিনি এক জন বৈধ ভোটার। যবে থেকে তিনি ভোটাধিকার পেয়েছেন, তবে থেকে সব ভোটে তিনি ভোট দিয়েছেন। কিন্তু এ বারই পারলেন না। বাবুন এ-ও বলেছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনকে জানানোর পাশাপাশি আমি হাওড়া জেলার নেতৃত্ব অরূপ রায় এবং কল্যাণ ঘোষকেও গোটা ঘটনা জানিয়েছি।’’ এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র শান্তনু সেন বলছেন, “পুরো বিষয়টি দেখে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কেন এমনটা ঘটল, তা তারাই বলতে পারবে।”
ভরা ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে ৪২ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। হাওড়া লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে টিকিট দেওয়া হয়েছে। তাতেই ‘ক্ষুব্ধ’ ছিলেন বাবুন। তাঁকে লোকসভা ভোটে টিকিট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল বলেই দাবি করেছিলেন তিনি। সেই সময় বাবুন হাওড়ার ভোটার হয়েছিলেন। সেই আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় প্রয়োজনে নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়তে পারেন বলেও গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। এই বিতর্কের মধ্যে দিল্লিও উড়ে যান তিনি। বিজেপির সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন বলে খবর ছড়ায়। এর পরই বাবুনকে ‘তাজ্য’ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বলেছিলেন, “আমি সরাসরি বলছি বড় হলে অনেকের লোভ বেশি বেড়ে যায়। আমার পরিবারের ও কোনও সদস্য বলে মনে করি না। আজ থেকে কোনও সম্পর্ক নেই। ভাই বলে কেউ পরিচয় দেবেন না। কোনও সম্পর্ক নেই। পরিবারের সঙ্গে জড়াবেন না। দল যাঁকে প্রার্থী করেছেন, সেই প্রার্থী।” পরে অবশ্য পুরো বিষয়টির জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তিনি ভোটই দিতে পারলেন না।