বালিগঞ্জ উপ-নির্বাচনে বাজিমাত করলেন সিপিআইএম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম। বাবুল সুপ্রিয় ২০,০৩৮ ভোটে জিতলেও তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে ধস নেমেছে। সেখানে এক বছরে ৩০ শতাংশ ভোট বেড়েছে বামেদের। সায়রা পেয়েছেন ৩০,৮১৮ ভোট।
৪ ও ৬৫ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূলের বাবুল সুপ্রিয়কে ছাপিয়ে জয় পেয়েছেন সিপিএমের সায়রা শাহ হালিম। ৬৫ নম্বর ওয়ার্ড হল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (Buddhadeb Bhattacharya)পাড়া। পাম অ্যাভিউনিউ, মেফেয়ার রোড, রাইফেল রেঞ্জ রোডের মতো এলাকা পড়ে এই ওয়ার্ডে। সেখানে বাবুলকে ৯১৮ ভোটে পিছিয়ে থাকতে হয়েছে। ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডে সায়রা শাহ হালিম লিড পেয়েছেন ২২৪ ভোটে। সামগ্রিক ভাবেই বালিগঞ্জে বামেরা ভাল ফল করেছে আগের তুলনায়।
এবার বালিগঞ্জে ৩৬ শতাংশ ভোট গিয়েছে বামেদের ঝুলিতে। বছরখানেক আগে সংযুক্ত মোর্চা জোটের সিপিআইএম প্রার্থী ফুয়াদ হালিম পেয়েছিলেন ৫.৭ শতাংশের মতো ভোট। অর্থাৎ একলাফে প্রায় ৩০ শতাংশ ভোট বেড়েছে বামেদের। কংগ্রেসের ভোট যুক্ত হলে সেই উত্থানটা আরও বেশি হত।
আরও পড়ুন: Bagtui Clash: ভাদু শেখের খুনের ঘটনার তদন্তে CBI, নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, ‘নো ভোট টু বাবুল’ প্রচার প্রভাব ফেলেছে। আসানসোলে হিংসার সময় বাবুলের ভূমিকা নিয়ে যে প্রচার করা হয়েছিল, তাতে সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের থেকে সরে গিয়েছে। এমনকী সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ৬৪ এবং ৬৫ ওয়ার্ডেও পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল। তার ফলে বামেদের ঝুলি ফুলেফেঁপে উঠেছে।
অতীতে স্বামী বা পরিচিতদের হয়ে ভোটের প্রচার করেছিলেন। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে আন্দোলনেরও একেবারে প্রথম সারিতে ছিলেন। কিন্তু নিজে ভোটের ময়দানে এই প্রথম লড়তে নেমেছিলেন। আপাত-অসম লড়াইয়ে নেমেছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহের ভাইঝি সায়রা। প্রতিপক্ষ শুধু বাবুল সুপ্রিয় ছিলেন না। ভাঙাচোরা সংগঠন নিয়ে লাল ঝান্ডা কাঁধে সায়রাকে লড়তে হয়েছে দক্ষিণ কলকাতায় তৃণমূলের প্রবল সাংগঠনিক শক্তির বিরুদ্ধেও। প্রচারে চেষ্টার ত্রুটি করেননি ফুয়াদ-জায়া। নাম ঘোষণা হতেই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন প্রচারে। তার পর থেকে দিনরাত এক করে প্রচার সেরেছেন। শনিবারের ফল বলছে, হেরে গিয়েছেন সায়রা।
কিন্তু রাজনীতির ভোটের অঙ্ক তো শুধু জেতা-হারায় আটকে থাকে না। কত ভোট পেলেন, আগের চেয়ে বেশি না কম, সেই অঙ্কও কষতে হয় রাজনীতিকদের। সায়রাও কষবেন নিশ্চিত। রাজনৈতিক মহল বলছে, ভোটের লড়াইয়ে হয়তো হেরেছেন। কিন্তু লড়াইয়ের পথে তাঁর যাত্রা তারিফ কুড়িয়েছে। জীবনে প্রথম ভোটে লড়ে আপাতত এটাই প্রাপ্তি সায়রা শাহ হালিমের।
আরও পড়ুন: Ballygunge: সুব্রতের ধারেকাছে নেই বাবুল! পুরভোটের ৪০ হাজার লিড বেমালুম উধাও তৃণমূলের