অমিত শাহের রাজ্য সফরের মাঝেই কাশীপুরে বিজেপি যুব মোর্চার নেতার রহস্যমৃত্যু ঘিরে তুলকালাম পরিস্থিতি। কাশীপুর রেল কলোনির পরিত্যক্ত ঘর থেকে বিজেপি যুব নেতা অর্জুন চৌরাসিয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। খুন বলে অভিযোগ পরিবারের। তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ বিজেপির।
অর্জুনের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই বিজেপি নেতা কর্মীদের কাশীপুরে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন উত্তর কলকাতা জেলা বিজেপির সভাপতি কল্যাণ চৌবে। সেই মতো অকুস্থলে আসতে থাকেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। সেই সময়ই ঘটনাস্থলে পৌঁছন কাশীপুর-বেলগাছিয়ার তৃণমূল বিধায়ক অতীন ঘোষ। তাঁর সঙ্গেই ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় কাউন্সিলর সুমন সিংহ। তাতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুই দলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে বিক্ষিপ্ত ভাবে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। তাতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অতীনকে ঘিরে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিতে থাকেন বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা। পাল্টা বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশে স্লোগান দিতে থাকেন তৃণমূল কর্মীরাও। দুই পক্ষের মাঝে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে থাকে পুলিশ। দায়িত্বে ডিসি সেন্ট্রাল ও ডিসি নর্থ। মৃদু লাঠি চালিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ।
বিজেপির দাবি, অমিত শাহ না আসা পর্যন্ত অর্জুনের মৃতদেহ ছুঁতে দেওয়া হবে না পুলিশকে। পাল্টা বিজেপি কর্মী সমর্থকদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে থাকে তৃণমূল। এতে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। যে ঘরে অর্জুনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়, কর্মী, সমর্থকদের নিয়ে সেই ঘরের দরজা আগলে দাঁড়িয়ে পড়েন কল্যাণ।
পুলিশ দু’পক্ষকে দু’দিকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে লাঠিচার্জ করতেও দেখা যায় পুলিশকে। উত্তেজিত দু’পক্ষকে সরিয়ে দেওয়ার পর অকুস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ততক্ষণে কেটে গিয়েছে ৫ ঘণ্টা।
আরও পড়ুন: শপথে কাঁটা! সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি বাবুলের, পালটা টুইট ধনখড়ের
এদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় বিধায়ক অতীন ঘোষ বলেন, ”মৃতদেহ নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। শকুনের মতো মৃতদেহের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। নির্বাচনের সময় ও আমাদের হয়ে কাজ করেছিল। ওঁদের পরিবারে আত্মহত্যার ট্র্যাডিশন আছে। ওঁর বাবাও আত্মঘাতী হয়েছিলেন।”
মৃত অর্জুন চৌরাসিয়া কাশীপুর-বেলগাছিয়া বিজেপি যুব মোর্চার মণ্ডল সহ সভাপতি ছিলেন বলে দাবি পদ্ম শিবিরের। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল রাত সাড়ে আটটার পর বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বেসরকারি একটি সংস্থায় কর্মরত অর্জুন। গতকালই তিনি বেতন পেয়েছিলেন। তবে রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি তিনি। এরপর সকালে রেল কলোনির পরিত্যক্ত একটি ঘর থেকে অর্জুনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
দলের যুব নেতার মৃত্যুতে শাসকদলকে কাঠগড়ায় তুলে সোচ্চার বিজেপি। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই অর্জুনকে খুন করে দেহ ঝুলিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ পদ্ম শিবিরের।
আরও পড়ুন: আমরা করি লক্ষ্মীর ভান্ডার, ওরা করে কুৎসার ভান্ডার: মমতা