এর আগে একাধিকবার অসুস্থ হয়েছেন। হাসপাতালে গিয়েছেন। ফিরেও এসেছেন। কিন্তু এবার আর হাসপাতালে নেওয়াই গেল না রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। সকাল ৮টা ২০ মিনিটে পাম অ্যাভিনিউয়ে নিজের দু-কামরার ছোট্ট ফ্ল্যাটেই না ফেরার দুনিয়ায় চলে গেলেন বুদ্ধবাবু।
সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানান, আগামীকাল সকাল ১১টা থেকে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে তাঁর মরদেহ শায়িত থাকবে সকলের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। বিকেল চারটেয় শুরু হবে শেষযাত্রা। চিকিৎসাশাস্ত্রের উন্নতির জন্য দেহ দান করেছিলেন তিনি। তাঁর ইচ্ছেকে মর্যাদা দিয়েই তারপর দেহদান করা হবে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা বেজে ২০ মিনিটে তাঁর পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতেই প্রয়াত হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেই খবর পাওয়ার পরেই সেখানে পৌঁছন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিম। ছুটে আসেন দলের নেতা কর্মীরা। বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্ররা পৌঁছে যান। দৃশ্যতই ভেঙে পড়তে দেখা যায় তাঁকে। সেলিম বলেন, ‘‘জীবন যুদ্ধ লড়ছিলেন। চিকিৎসকেরাও চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হল না।’’ দলীয় সূত্রে খবর, এসএসকেএম হাসপাতালে দান করা হবে বুদ্ধদেবের দেহ।
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের পরিবারে ১৯৪৪-এ উত্তর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ১৯৬১-তে কলকাতার শৈলেন্দ্র সরকার বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। ১৯৬৪-তে কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে বাংলা ভাষায় স্নাতক হন। স্কুলজীবনেই এনসিসি-তে যোগদান করেন। কলেজ জীবনেও এনসিসি-র ক্যাডেট (নৌ শাখা) ছিলেন। কলেজ জীবনে সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য হন। এরপর সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটি ও সিপিআই(এম)-এর পলিট ব্যুরোর সদস্য হন। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮২ পর্যন্ত প্রথম বাম সরকারের তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৯৯-তে উপমুখ্যমন্ত্রীর হন। ২০০০-তে শারীরিক অসুস্থতার কারণে জ্যোতি বসু সরে দাঁড়ালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ২০০১ থেকে ২০০৬ এবং ২০০৬ থেকে ২০১১, পর পর দুবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন। তবে ২০১১-তে প্রবল তৃণমূল হাওয়ায় নিজের দীর্ঘদিনের গড় যাদবপুরেই পরাজিত হন তিনি।