রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক তেতো হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের অপসারণ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। সেই রিট পিটিশন আজ, শুক্রবার সরাসরি খারিজ করে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
আদালত জানায়, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে করা মামলার কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। তা ছাড়া সংবিধান অনুযায়ী, রাজ্যপালের কাজে আদালত কোনও ভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এদিন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেন, সংবিধান রাজ্যপালকে যে অধিকার দিয়েছে তাতে তিনি আদালতের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য নন।
সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক ইস্যুতে নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। রাজ্যেকে ক্রমাগত আক্রমণ শানিয়েছেন রাজ্যপাল। বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য সরকারের কাছে জবাব তলব করেছেন তিনি। অভিযোগ, রাজ্য সরকারের কাজে দখলদারি করেছে রাজ্যপাল। দ্বন্দ্বের জল এতটাই গড়িয়েছে যে রাজ্যপালকে সরানোর দাবিতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য সরকার। সংসদের বাজেট অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি অভিযোগ জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদরা। রাজ্যসভায় প্রস্তাবও পেশ হয়েছে। আর তারপর উচ্চ আদালতে গড়াল বিষয়টি।
আরও পড়ুন: ঘিরে ‘গো ব্যাক স্লোগান’, আশুতোষ কলেজে পড়ুয়াদের দিকে তেড়ে গেলেন Suvendu
জনস্বার্থ মামলাকারী (PIL)আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকারের দাবি, সংবিধান বহির্ভূত, সংবিধান বিরোধী কাজ করছেন রাজ্যপাল। রাজনৈতিক দলের মুখপাত্রের মতো আচরণ করছেন তিনি। এমনকী, একের পর অসাংবিধানিক মন্তব্য করছেন রাজ্যপাল, দাবি মামলাকারী। তাঁর কথায়, রাজ্যপাল নিরপেক্ষ পদ হয়েও এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে রাজ্যের কাজে বাধা দিচ্ছেন। তাই ধনকড়কে অবিলম্বে সরানোর দাবি জানিয়েছেন আইনজীবী। তবে রাজ্যপালকে সরাসরি কোনও মামলার পক্ষ করা যায় না। তাই পরোক্ষভাবে তাঁকে মামলার পক্ষ করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, এই মামলায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানির পর রায়দান স্থগিত ছিল। শুনানিতে রাজ্যপালের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন সলিসিটির জেনারেল (SG) তুষার মেহতা। তাঁর মত ছিল, এভাবে একজন সাংবিধানিক প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করা যায় না। যে বা যাঁরা মামলা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনেই প্রধান বিচারপতি মামলাটির ভিত্তি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। আর শুক্রবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব মামলাটি ভিত্তিহীন বলে খারিজ করে দেন।
আরও পড়ুন: TMC: সব জল্পনার অবসান! নিজের পুরনো পদে ফিরে পেলেন অভিষেক, সমণ্বয়কারীর দায়িত্বে ফিরহাদ