রাজ্যের সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে পড়ুয়াদের নীল-সাদা ইউনিফর্ম। তাতে আবার বিশ্ববাংলা লোগো, শিক্ষা দফতরের এই নির্দেশিকা ঘিরে কয়েকদিন ধরে শোরগোল বাংলায়। শিক্ষামহলে এই নিয়ে চর্চার শেষ নেই। অনেকেই সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন। হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে বিশ্ববাংলার লোগো ব্যবহার নিয়ে। এবার ইউনিফর্ম বিতর্কে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘বিশ্ববাংলা লোগো তৃণমূলের নয়, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লোগো।’’
করোনা টিকার শংসাপত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি কেন থাকবে? এই নিয়ে দেশ জুড়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় মোদীর ছবি ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। এ বার ঘুরিয়ে বিশ্ববাংলা লোগো বিতর্কে সেই প্রসঙ্গ তুলে মোদী সরকারকে খোঁচা দিলেন মমতা। বললেন, ‘‘ভারত সরকার যদি নিজের নামে স্ট্যাম্প লাগাতে পারে বাংলার নামে বাংলার সরকার স্ট্যাম্প লাগাতে পারে না? দিল্লির লোকেরা হলে তো নিজের ছবি লাগিয়ে দিত! আমরা সে সব করি না।’’
এ দিন লোগো বিতর্কে বিরোধীদের একহাত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কে একটা কোর্টে গিয়ে বলে দিল, এটা নাকি তৃণমূলের লোগো! খোঁজই রাখে না। সব কিছুতেই তৃণমূলের দোষ। তৈরি হয়েছে কিছু নন্দঘোষ। রাম-বাম-শ্যামের দল।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘লোগোটা আমি তৈরি করেছিলাম। আইন করে ওটা বাংলা সরকারের কাছে আছে। আমি নিজে এঁকে বাংলার সরকারকে দিয়েছিলাম। সরকারের যত লোগো, ম্যাক্সিমাম লোগো আমার করা। তার জন্য আমি পয়সা নিই না। নামও কিনি না। এটা আমার দায়বদ্ধতা ও দায়িত্ব। প্রাইভেট স্কুল ইচ্ছেমতো ব্যাজ ব্যবহার করতেই পারে। আমরা বারণ করিনি। সরকারি স্কুলেরও যদি নিজস্ব ব্যাজ থাকে, তা লাগাক না। আমরা তো আপত্তি করিনি। শুধু জামায় একটা বিশ্ববাংলা ব্র্যান্ডের ব্যাজ থাকবে। আমি যে বাংলার অধিবাসী, এটা তার একটা প্রমাণ।’’
মমতা এদিন বলেছেন, “স্কুলের ছেলেমেয়েদের পোশাক বাইরে থেকে আনাব না। আমাদের ঘরের ছেলেমেয়েরা, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর লোকজনই বানাবেন। তাঁদের আর অন্য কারও উপর নির্ভর করে থাকতে হবে না। আমরা বিনা পয়সায় পোশাক দিচ্ছি, সেখানে বাংলার একটা লোগো থাকবে না! বিশ্ব বাংলার এই লোগো তৃণমূল বা কোনও রাজনৈতিক দলের নয়, এটা সরকারের লোগো।”