প্রেসিডেন্সিতে প্রেম করলে ‘ধরপাকড়’ ! তলব করা হচ্ছে জুটি-র অভিভাবকদের। প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পড়ুয়াদের একাংশের। ডিন অফ স্টুডেন্টস-কে স্মারকলিপি এসএফআইয়ের । ‘অত্যন্ত ব্যক্তিগত ঘটনা ঘটছে ক্যাম্পাসে। ছাত্র-অভিভাবকদের কাউন্সেলিং করা হচ্ছে’। দাবি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।পাবলিক প্লেসে অর্থাৎ প্রকাশ্যে ঠিক কতখানি মেলামেশা করা যাবে, তার মাপকাঠি ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে। এমনকী প্রয়োজন মনে করলে যুগলের অভিভাবকদেরও তলব করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে তীব্র বিতর্ক।
এবার পড়ুয়াদের হয়েই সুর চড়ালেন কামারহাটির ‘কালারফুল’ বিধায়ক। মদন মিত্র (Madan Mitra) বলছেন, “গার্জেনদের ডেকে কি পর্নোগ্রাফি দেখাবে? প্রেসিডেন্সির পড়ুয়ারা জানে কতটা কী করা যায়। কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, প্রেমে হাত দেবেন না প্লিজ।” মদন মিত্র বলেন, “প্রেমটা খুব কঠিন বিষয়। মেরেছ কলসির কানা, তাই বলে কি প্রেম দেব না? প্রেম বন্ধ হয়ে গেলে বিয়ে কম হবে। আর বিয়ে কম হলে ডেলিভারি কমবে। ডেলিভারি কম হলে স্কুলে পড়ুয়া কম হবে। তাছাড়া দু’টো ছেলেমেয়ে একসঙ্গে বোটানি, কেমিস্ট্রি, বায়োলজি থেকে জুলজি সব আলোচনা করতে পারে। কেউ বাধা দিতে পারে না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অরুণকুমার মাইতি বলছেন, “নীতি পুলিশি করার কোনও ইচ্ছা আমাদের নেই। আমরা কয়েকজন পড়ুয়া ও তাঁদের অভিভাবকদের নিয়ে একটা কাউন্সিলিং সেশনের আয়োজন করেছিলাম। সেখানেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু পড়ুয়ার ব্যক্তিগত মুহূর্ত যাপনের কথা উঠে এসেছিল।”
শুক্রবার রাত থেকেই এ খবর সামনে আসায় জোর শোরগোল শুরু হয়েছে কলেজ স্ট্রিট চত্বরে। রাজনৈতিক মহলেও চাপানউতোর। কড়া প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা যাচ্ছে এসএফআইকে (SFI)।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি প্রান্তিক চক্রবর্তী বলছেন, “প্রেসিডেন্সির মুক্ত ভাবনা বজায় থাক। সেটা ভালবাসায় হোক, শিক্ষায় হোক, সেটা রাজনীতিতে হোক। প্রেম, পড়াশোনা, পলেটিক্স এই তিনটে জিনিস সর্বদা মুক্ত চিন্তার জায়গায় থাকা উচিত। প্রেসিডেন্সি সেই মুক্ত চিন্তার প্রতীক। কিন্তু, সেই মুক্ত চিন্তা যাতে স্বেচ্ছাচারিতায় রূপান্তরিত না হয় সেটা ছাত্রছাত্রীদেরও দেখা যেমন কাম্য। তেমনই আবার স্বাধীনতা যাতে খর্ব না হয় সেটা কর্তৃপক্ষের দেখা দায়িত্ব।”
ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য। তিনি বলছেন, “এই পুরোটা আসলে একটা চক্রান্ত। কারণ ক্যাম্পাসে ছাত্রছাত্রীরা আসে, এখানেই একে অপরের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়। একে অন্যের সঙ্গে মেলামেশা করে। তর্ক-বিতর্ক করে। আড্ডা মারে। এই সব কিছুর মধ্যে তাঁরা সিস্টেমকে, প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্ন করতে শেখে। সুতরাং হাত ধরে হাঁটা যাবে না আসলে মিটিং মিছিল করা যাবে না ফতোয়ারই সমান।”