ফিরে এল আড়াই বছর আগের আতঙ্ক। বউবাজারের একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা গিয়েছে। এবার ফাটল আতঙ্ক মদন দত্ত লেনে। রাতে কিছু বাড়িতে ফাটল দেখা যেতেই জিনিসপত্র নিয়ে রাস্তায় বার হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। জানা গিয়েছে, ১০টি পরিবার বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়। কী হবে তাঁদের ভবিষ্যত? এই ভেবেই দিশেহারা মদন দত্ত লেনের বাসিন্দারা। রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসছেন তাঁরা। শুক্রবার সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন মেট্রো রেলের আধিকারিকরা। তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। পুরো ঘটনায় মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষেপ বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর।
মেট্রো রেল সূত্রে জানা যায়, জয়েন্ট বক্স বসানোর জন্য ২৯ মিটারের কংক্রিটের স্ল্যাব তৈরি করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। বাকি রয়েছে ৯ মিটার স্ল্যাব তৈরির কাজ। এই ৯ মিটারের কাজের জন্য দেড় মিটার মাটি খোঁড়ার কাজ হচ্ছিল। সেই দক্ষিণ-পশ্চিম কোন থেকেই ছিদ্র হয়ে জল বেরোতে শুরু করে। ১১টি জায়গা থেকে জল বের হয়েছিল আগেই। ১০ টি জায়গা বন্ধ করা গিয়েছে। সিমেন্ট ও রাসায়নিক দিয়ে ছিদ্র বন্ধ করা হচ্ছে। একটি জায়গায় কাজ চলছে বন্ধ করার। এসপ্লানেডের দিকে যে টানেল রয়েছে, সেখানেই এই সমস্যা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
হুগলি নদীর তলা দিয়ে হাওড়া ময়দান থেকে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত যাবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। মোট দৈর্ঘ্য হবে ১৬.৫ কিলোমিটার। তার মধ্যে ১০.৮ কিলোমিটার মাটির তলা দিয়ে যাবে মেট্রো। মাটির ওপর দিয়ে যাবে বাকি ৫.৭৫ কিলোমিটার। নদীর তলা দিয়ে মেট্রো চালানোর পরিকল্পনা এই প্রথম। কিন্তু সেই লাইন তৈরি করতে গিয়েই বারবার বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মমতার নির্দেশে চাকরি বিক্রি হয়েছে, মেনে নিলেন শিক্ষামন্ত্রী, দাবি বিকাশের
এদিকে, ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন এলাকার কাউন্সিলর বিশ্বরুপ দে। তিনি ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন। তিনিও গোটা ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “মানুষের সঙ্গে গিনিপিগের মতো ব্যবহার করছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। কে দায়িত্ব নেবে এই মানুষদের? শুধুমাত্র মেট্রো কর্তৃপক্ষের জন্য বউবাজার স্ট্রিট ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে। আমরা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের তরফে লিখিত বয়ান চেয়েছি।”
জানা গিয়েছে, ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ ফাটল ধরেছে। কমপক্ষে ১০টি বাড়িতে ফাটল ধরেছে। ভোর রাত থেকেই বাড়ির বাসিন্দারা ব্যাগপত্র গুছিয়ে রাস্তায় বসে রয়েছেন। এলাকা খালি করার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি। ভোর সাড়ে ছ’টা নাগাদ মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা আসেন।
বারংবার বাড়িতে ফাটল ধরার ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা জানিয়েছেন, এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হওয়া অবধি তাঁরা কোথাও যাবেন না। বারবার হোটেলে থাকা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে কিছু বাসিন্দারা ইতিমধ্যেই পুলিশের সহায়তায় হোটেলে চলে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: Fire: টালিগঞ্জে প্রযোজনা সংস্থার গুদামে আগুন, ঘটনাস্থলে দমকলের ১৮টি ইঞ্জিন