সিঙ্গেল বেঞ্চের পর ডিভিশন বেঞ্চেও ধাক্কা রাজ্যের। ধর্মতলায় বিজেপির সভায় অনুমতি দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করল না প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সভায় উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের।
উল্লেখ্য, বিজেপির সভার বিরোধিতা করে রাজ্য সরকারের যুক্তি ছিল, ধর্মতলায় সভা করলে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে যাবে। আজকে শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেন, ‘২১ জুলাই বাতিল করে দিলে ভালো হবে? ধর্মতলায় তাহলে কোনও মিটিং, মিছিল, সভাই আর হবে না। সবার জন্য সব কর্মসূচি বন্ধ করা হবে তাহলে। এই ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ভাবে অযথা সমস্যা তৈরি করা হচ্ছে। বালিগঞ্জ এলাকায় রাত ৩টে পর্যন্ত ড্রাম বাজিয়ে লরির উপরে লোকজন শোভাযাত্রা করে। তখন পুলিশ কিছু বলে না। কয়েকদিন আগেই বিনা নোটিসে গোটা শহর অবরুদ্ধ করে দিয়েছিল কুর্মি সম্প্রদায়ের আন্দোলনকারীরা। কেন এরকম হবে?’ প্রসঙ্গত, বিজেপির তরফেও রাজ্যের শাসকদলের ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচির প্রসঙ্গ তোলা হয়েছিল। তৃণমূল ওই দিন ধর্মতলায় সভা করতে পারলে, তারা কেন পারবে না, আদালতে সেই প্রশ্নই তোলে বিজেপি।
শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, “রাজ্যে এই সব কর্মসূচি লেগেই থাকে। মানুষের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে ভাবেন না। সরকারি কর্মচারী, রাজনৈতিক দল, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সবাই রাস্তা আটকে মিছিল করে। পুলিশ অনুমতি দিয়ে দেয়। এটা এখানে খুব সাধারণ বিষয়। অন্য রাজ্যে আমার অভিজ্ঞতা আলাদা। হাই কোর্ট থেকে যাওয়ার জন্য গত কালও পুলিশের তরফ থেকে দু’টি চিঠি পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে, আমাদের বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করতে।” তিনি আরও বলেন, “আবার কর্মসূচি হলে সবাই তাই করবে। মানুষ ঘুরে ঘুরে যাবে।”
রাজ্যের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, “অনেকে অনেক কিছু করছে, তবুও রং দেখা হচ্ছে কেন? মানুষকে অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দিন। কী করা যাবে? ছটপূজা নিয়ে রাস্তা বন্ধ ছিল। মানুষ অন্য জায়গা দিয়ে ঘুরছে।”এই প্রসঙ্গেই তাঁর সংযোজন, “এত আগেও আবেদন করার পরেও আপনারা এটাকে যদি অনুমতি না দেন তা হলে তো রাজ্যে কোনও কর্মসূচি করা যাবে না। আমরা বলে দিচ্ছি, রাজ্যের কোথাও কোনও কর্মসূচি হবে না।”
আদালত জানিয়েছে, বিজেপিকে কর্মসূচির জন্য কলকাতা পুলিশের ওয়েবসাইটে দেওয়া শর্ত মানতে হবে। সেই সঙ্গে পুলিশকে আদালতের নির্দেশ, সভা আয়োজনের জন্য অতিরিক্ত কোনও শর্ত আরোপ করা যাবে না বিজেপির ওপর।