কাজে ফাঁকি নয়। সরকারি কর্মীদের কড়া হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির। নিচু তলা থেকে ওপর তলা। বার্তাটা দিলেন সকলকেই। ফাঁকি দিলে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ বা বরখাস্তের রাস্তাতেও যে রাজ্য সরকার হাঁটতে পারে এদিনের বৈঠকে হাবেভাবে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।
সাধারণ মানুষের কাছে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দিতে রাজ্যে আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে “জন সংযোগ যাত্রা”। যেখানে পাড়ায় পাড়ায় পৌঁছে যাবেন রাজ্য সরকারি আধিকারিকরা। ২০ জানুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি ।
কর্মসূচি শুরুর আগে তিনি বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক ও সমস্ত দফতরে প্রধান সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন সমস্ত জেলার জেলাশাসক ও দপ্তরের প্রধান সচিবরা আর এই বৈঠকেই কড়া বার্তা দেন তিনি। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানান, পরিষেবা আটকে রাখার অভিযোগ উঠলে সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্নীতিতে জড়ালেও রেহাই পাবেন না সরকারি আধিকারিকরা, বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘কিছু অফিসার এই সব কাজ করছেন বলেই সরকারের বিরুদ্ধে কোথাও কোথাও প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা দেখা যাচ্ছে। এ জিনিস আর আমি সহ্য করব না।’’ মুখ্যসচিবের উদ্দেশে মমতা বলে দেন, ‘‘কেউ অসহযোগিতা করলে সেকশন ৫৬ জে মোতাবেক সোজা বরখাস্ত করে দিন। তারপর আমি দেখে নেব।’’ এদিনের বৈঠকে বিভাগ ধরে ধরে ভুল-ত্রুটি গাফিলতি, এমনকী দুর্নীতির চেষ্টার কথাও তিনি স্পষ্ট বলে দেন। গয়ংগচ্ছ মনোভাব নিয়ে চলছেন যাঁরা তাঁদের সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘‘কিছু অফিসার-কর্মী কাজে ফাঁকি দিচ্ছেন। শুক্রবার দুপুর দু’টোর সময় বেরিয়ে যাচ্ছেন। সোমবার দুপুর একটার সময় হেলতে দুলতে আসছেন। সব খবর আমি রাখি। মানুষের কাজ চালু রাখতে দরকারে শনি-রবিবারও কাজ করতে হবে। আগে কাজ পড়ে ছুটি।’’
নবান্ন সূত্রের খবর, তিরিশ মিনিটের বৈঠকে কার্যত অফিসারদের চরম হুঁশিয়ারি দেন মমতা। বর্ধিত হারে মহার্ঘ ভাতার দাবিতে এক শ্রেণির রাজ্য সরকারি কর্মচারী লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাতে যে সরকারি কাজে ক্ষতি হচ্ছে তা সম্প্রতি আদালতও স্বীকার করে নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এর আগে বেশ কয়েকবার নবান্নের কয়েকটি দফতরে আচমকা পরিদর্শন করে হাজিরার হার কম কেন, টেবিলে জমে থাকা ফাইল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এবার দিলেন চরম হুঁশিয়ারি।