ভারতীয় দণ্ডবিধি, ফৌজদারি দণ্ডবিধি ও ভারতীয় সাক্ষ্য আইনে বদল আনতে চাইছে কেন্দ্র। সংসদের বিশেষ অধিবেশন চলাকালীন এগুলিকে পরিবর্তন করার জন্য তিনটি বিলও পাশ হয়েছে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতাবাদের সময় থেকে চলে আসা এই আইনগুলিতে পরিবর্তন আনতে চায় কেন্দ্র। এই তিনটি পরিবর্তন করার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক যে খসড়া তৈরি করেছে, তা ইতিমধ্যেই নেড়েচেড়ে দেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সেই খসড়া দেখে ‘স্তম্ভিত’ মমতা। বুধবার এক্স হ্যান্ডেলে নিজেই সেকথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এই খসড়াগুলি ভীষণভাবে নাগরিক-বিরোধী বলেও মনে করছেন তিনি।
ইন্ডিয়ান পেনাল কোড বা ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪(ক) ধারা বদলে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র। ইন্ডিয়ান পেনাল কোড, কোড অফ ক্রিমিন্যাল প্রসিডিউর বা সিআরপিসি, এবং ভারতীয় সাক্ষ্য আইন বা ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট এই তিন আইনের বদলের প্রস্তাব দিয়েছে। ১৮৬০ সালের ইন্ডিয়ান পেনাল কোড বা ভারতীয় দণ্ডবিধি এবার হতে চলেছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা। সিআরপিসি (CrPC) বদলে গিয়ে হবে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা। এবং এভিডেন্স অ্যাক্ট বদলে হবে ভারতীয় সাক্ষ্য আইন। সেই আইনের খসড়া ইতিমধ্যেই প্রস্তুত করে ফেলেছে কেন্দ্র। সেই খসড়াতেই আপত্তি মমতার।
এদিন এক্স হ্যান্ডলে মমতা লিখেছেন, ‘‘ভারতীয় দণ্ডবিধি, ফৌজদারি দণ্ডবিধি এবং ভারতীয় সাক্ষ্য আইন প্রতিস্থাপনের জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তৈরি খসড়াগুলি পড়েছি। স্তম্ভিত হয়েছি যে, এই প্রচেষ্টার মধ্যে চুপিসাড়ে অত্যন্ত কড়া এবং কঠোর নাগরিক বিরোধী বিধি প্রবর্তনের একটি গুরুতর প্রচেষ্টা রয়েছে।’’ এর পরেই তাঁর অভিযোগ, ‘‘আগে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন ছিল। তা প্রত্যাহারের নাম করে, তারা (কেন্দ্রীয় সরকার) প্রস্তাবিত ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় আরও কঠোর এবং স্বেচ্ছাচারী ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে, যা নাগরিকদের আরও মারাত্মক ভাবে প্রভাবিত করতে পারে।’’
Have been reading the drafts prepared by the Union Home Ministry to substitute the Indian Penal Code, Code of Criminal Procedure and Indian Evidence Act. Stunned to find that there is a serious attempt to quietly introduce very harsh and draconian anti-citizen provisions in these…
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) October 11, 2023
মমতার বক্তব্য, ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসা জরুরি। কিন্তু সেটা শুধু খাতায়-কলমে নয়, মানসিকতাতেও। আমি দেশের বুদ্ধিজীবী এবং সচেতন নাগরিকদের অনুরোধ করব, এই খসড়াটি পড়ুন, এর প্রতিবাদ হোক। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তৃণমূল (TMC) সাংসদরা সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটিতে এই খসড়ার প্রতিবাদ করবেন। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে আইন বদলানো দরকার ঠিকই, কিন্তু ঔপনিবেশিক এবং স্বৈরাচারী মানসিকতা যেন কোনওভাবেই ঘুরপথে রাজধানীতে প্রবেশ করতে না পারে।
আরও পড়ুন: Rujira Banerjee: ইডির তলবে সিজিও কমপ্লেক্সে অভিষেক পত্নী রুজিরা, নিয়োগ মামলায় শুরু জিজ্ঞাসাবাদ