আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূলের জহর সরকার। বৃহস্পতিবার সরকারিভাবে পদত্যাগ পত্র জমা দিলেন তিনি। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড়কে সেই ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন জহর। তাঁর সঙ্গে দেখাও করেছেন তিনি। গত রবিবার রাজ্য সরকারকে নিয়ে একাধিক অসন্তোষের কারণ ব্যাখ্যা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছিলেন জহর সরকার।
এই ইস্তফাপত্র দিয়ে তিনি রাজনীতি থেকেও সরে গেলেন। সেটাই করবেন বলে আগেই জানিয়ে ছিলেন। জহর সরকারের ইস্তফার জেরে রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সংখ্যা কমে দাঁড়াল ১২। বাংলা থেকে ১৬টি রাজ্যসভা আসনের মধ্যে একটি খালি হয়ে গেল। তৃণমূল কংগ্রেসের ১২ জন ছাড়াও বাংলা থেকে বিজেপির দুই এবং বামেদের একজন রাজ্যসভা সাংসদ আছেন। সুতরাং একজন সাংসদ কমে যাওয়ার অর্থ সংসদের উচ্চকক্ষে একটু হলেও শক্তি কমে গেল। তবে ২০২২ সালে শিক্ষা দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং পরে গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ায় দলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছিলেন জহর সরকার। তখন তিনি বলেছিলেন, দলের একদিক পচে গিয়েছে। বাড়ির লোকজন ও বন্ধুবান্ধবরা তাঁকে রাজনীতি ছাড়তে বলেছেন।
জহরের ইস্তফার সিদ্ধান্তে তাঁকে আক্রমন করেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। জহরকে ‘ব্যক্তিকেন্দ্রিক’ বলে কটাক্ষ করে তাঁকে টিকিট দেওয়ার দলীয় সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। সৌগতের কথায়, ‘‘এই ধরনের মানুষদের মনোনয়ন দেওয়াই ঠিক নয়।’’ সৌগত বলেন, ‘‘দলের প্রতি কোনও কমিটমেন্ট (দায়বদ্ধতা) নেই। পাবলিকের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। ভাল কাজ করবেন ভেবে অন্য ক্ষেত্রের অনেককেই নিয়ে আসেন আমাদের নেত্রী। কিন্তু এঁদের কেউ কেউ ব্যক্তিকেন্দ্রিক। শুধু নিজেরটা ভাবেন। কোনও বিরুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলেই পালাতে চান আর দলকে অস্বস্তিতে ফেলেন।’’
জহর সরকার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে চিঠি দিয়েছিলেন তাতে উল্লেখ করেছিলেন, ”বিশ্বাস করুন এই মুহূর্তে রাজ্যের সাধারণ মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন ও রাগের বহিঃপ্রকাশ আমরা সবাই দেখছি, এর মূল কারণ কতিপয় পছন্দের আমলা ও দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পেশিশক্তির আস্ফালন। আমার এত বছরের জীবনে এমন ক্ষোভ ও সরকারের প্রতি সম্পূর্ণ অনাস্থা আগে কখনও দেখিনি।”