একটি বাংলা চ্যানেলের সাংবাদিকের সঙ্গে তাঁর ফোনালাপ ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।রবিবার ফেসবুক পোস্টে ক্ষমা চেয়ে সেই বিতর্কের সমাপ্তি ঘোষণা করতে চাইলেন কবীর সুমন। তবে ক্ষমা চাইলেও, শ্লেষ ছুঁড়ে দিলেন নিন্দুকদের উদ্দেশে।
রবিবার এক ফেসবুক পোস্টে শিল্পী লিখলেন, ‘ভেবে দেখলাম সে দিন টেলিফোনে এক সহনাগরিককে যে গাল দিয়েছিলাম, সেটা সুশীল সমাজের নিরিখে গর্হিত কাজ। এতে কাজের কাজ কিছু হল না, মাঝখান থেকে অনেকে রেগে গেলেন, উত্তেজিত হলেন। এমনিতেই করোনার উৎপাত তার উপর ফোনে গালমন্দ, লাভ কী। তাই আমি সহনাগরিকের কাছে, বিজেপি আরএসএস-এর কাছে এবং বাঙালিদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি।’
তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়া নিয়েও সুমন লিখেছেন, ‘আইনরক্ষীরা নিশ্চিন্ত থাকুন। আমি চেষ্টা করব সব ব্যাপারে একদম চুপ থাকতে। আর কোন কোন ব্যাপারে কে কে আমার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা দাবি করছেন বা করবেন বলে ভাবছেন দয়া করে একটি তালিকা বানিয়ে ডাকযোগ পাঠান। আমি নতমস্তকে সম্মতিসূচক সই করে দেব।’ সঙ্গে লেখেন, ‘আপনাদের যদি ভাবতে ভাল লাগে যে আমি খুব ভয় পেয়ে এটা লিখছি, তো তাইই ভাবুন। যেটা ভাবলে আপনাদের মন ভাল হয়ে ওঠে সেটাই ভাবুন।’
তবে পোস্টের শেষে তিনি সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে পদ্মশ্রী দেওয়া নিয়ে ফের ক্ষোভ জানিয়েছেন। লিখেছেন, ‘আমার মাতৃসমা, গুরুস্থানীয়া সুরসম্রাজ্ঞী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে তাঁর নব্বই বছর বয়সে যে পদ্মশ্রী খেতাব ছুঁড়ে দেওয়া হল তা মানতে পারলাম না।’
আরও পড়ুন: ভারতীয় মহিলার সঙ্গে নগ্ন অবস্থায় ভিডিয়ো চ্যাট! কূটনীতিককে দেশে ফেরাল বাংলাদেশ
উল্লেখ্য, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের পদ্মশ্রী পাওয়া নিয়ে মত জানতে বেসরকারি টিভি চ্যানেলের এক তরুণ সাংবাদিক তাঁকে ফোন করেছিলেন।এরপর থেকেই রীতিমতো বিতর্কে কবির সুমন। শুক্রবার থেকেই শিল্পীর সেই গালাগালের অডিও টেপ ভাইরাল হয়েছে। যাতে ছাপার অযোগ্য ভাষায় ওই সাংবাদিককে গালাগাল দিয়ে শোনা গিয়েছে। তবে, এই কণ্ঠস্বর কবীর সুমনের বলেই দাবি করা হচ্ছে যদিও রেডর্ডিংটির সত্যতা যাচাই করেনি The News Nest। এই ঘটনার পর বিভিন্ন মহলে কবীর সুমনের তীব্র সমালোচনা হয়। অন্যদিকে, ওই অডিওতে সাংবাদিকের পাশাপাশি বিজেপি এবং আরএসএসের (RSS) উদ্দেশেও মন্তব্য করেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই বিজেপির তরফে এই মন্তব্যের জেরে সুমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এদিন ক্ষমা চাইলেও কবীর সুমনের পালটা যুক্তি, ‘ওই চ্যানেলের প্রতিনিধি দু’জনের কথাবার্তা রেকর্ড করার কথা আমাকে বলেননি। আমার অনুমতি নেননি।’ এক্ষেত্রে শিল্পীর প্রশ্ন, ‘যে চ্যানেল বা দল দীর্ঘকাল ধরে আমাদের দেশের মুসলমানদের আক্রমণ ও অপমান করে চলেছে সেই চ্যানেলের লোককে গালাগাল দেওয়ার অধিকার কি আমার নেই?’ সবশেষে তাঁর বক্তব্য, ‘লুকিয়ে রেকর্ড করা একটি অডিও ক্লিপ যারা শুনেছেন এবং ব্যথিত হয়েছেন, তাঁদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী এই অধম।’
আরও পড়ুন: কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথীকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, বাংলাকে ১০০০ কোটি ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাঙ্ক