কেষ্টপুর জোড়া খুনে গ্রেফতার মাস্টারমাইন্ড, হাওড়া স্টেশন থেকে গ্রেফতার সত্যেন্দ্র। ১৮ দিন ধরে পালিয়ে বেরাচ্ছিল সত্যেন্দ্র চৌধুরী। ভিন রাজ্যে পালিয়ে যাওয়ার ছক ছিল তার। কিন্তু বিধাননগর গোয়েন্দা শাখার পুলিশের জালে তার আগেই ধরা পড়ে সে।
সিআইডি সূত্রে খবর, বাগুইআটির জগৎপুরে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন বিহারের সীতামারীর বাসিন্দা সত্যেন্দ্র। গত ২২ অগাস্ট বাগুইআটির ২ কিশোর অতনু দে ও অভিষেক নস্করকে খুনের পর থেকে আর তাকে এলাকায় দেখা যায়নি। গত সোমবার ২ কিশোরের খুনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর তার মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করা শুরু করেন গোয়েন্দারা। এর পর দেখা যায় দমদম ও বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন জায়গায় টাওয়ার লোকেশন পাওয়া যাচ্ছে। তবে দরকারি কথা বলে সঙ্গে সঙ্গে ফোন বন্ধ করে দিচ্ছিল সে। ফলে লাগাতার টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করা সম্ভব হচ্ছিল না গোয়েন্দাদের পক্ষে। তাছাড়া একের পর এক সিমকার্ড বদলাচ্ছিল সে।
এই পরিস্থিতিতে সত্যেন্দ্রর খোঁজ পেতে তাঁর আত্মীয়দের ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করা শুরু করেন গোয়েন্দারা। বৃহস্পতিবার এক আত্মীয়কে একটি নতুন নম্বর থেকে ফোন করে কথা বলে সত্যেন্দ্র। এর পর সেই নম্বর ট্র্যাকিংয়ে বসায় গোয়েন্দারা। শুক্রবার সকালে ফের সেই আত্মীয়কে সত্যেন্দ্র ফোন করলে দেখা যায় তখন হাওড়া স্টেশনে রয়েছে সে। সঙ্গে সঙ্গে হাওড়া স্টেশনে সাদা পোশাকে পৌঁছে যায় গোয়েন্দাদের বিশাল দল।
আরও পড়ুন: Supreme Court: ১৯ জন নেতার সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলায় ‘সুপ্রিম’ স্থগিতাদেশ, তৃণমূলের বড় স্বস্তি
সত্যেন্দ্র যে অতনু ও অভিষেকের খুনের মূল অভিযুক্ত তা প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিল পরিবার। সেই সূত্র ধরে সত্যেন্দ্র ‘জোন’ চিহ্নিত করে ফেলেন তদন্তকারীরা। কাদের সঙ্গে মেলামেশা করত, কোথায় যেত, তার গতিবিধি সম্পর্কে একটা প্রাথমিক তথ্য গুছিয়ে নেন তদন্তকারীরা। যে চার জনকে প্রথম গ্রেফতার করা হয়, তাদের থেকে সত্যেন্দ্র সম্পর্কে বাকি তথ্য, ফোন নম্বর লোকেট-সহ একাধিক তথ্যের ভিত্তিতে গোপনে জাল বিছোতে থাকেন তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, সত্যেন্দ্র ভিনরাজ্যে পালাতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল। কারণ, ২২ অগাস্টের পর থেকে সে কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলেনি। তার কাছে থাকা টাকা এত দিনে ফুরিয়ে আসার কথা। সেকথা অনুমান করেই আত্মীয়দের ফোন নম্বর ট্যাপ করে সিআইডি।
ধৃতকে বিধাননগর কমিশনারেটের দফতরে নিয়ে গিয়েছেন সিআইডির আধিকারিকরা। কেন সে ২ কিশোরকে খুন করল তা জানতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন গোয়েন্দারা। রবিবার তাকে বারাসত আদালতে পেশ করা হতে পারে।
আরও পড়ুন: Baguiati Double Murder: অতনুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল সত্যেন্দ্রর স্ত্রীর! পুলিশি তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য