মধ্যরাতে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। রাতভর প্রবল ঝড়বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত কলকাতা। কোথাও উপড়ে পড়েছে গাছ, কোথাও বা হাঁটুজলে চরম দুর্ভোগ। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন একাধিক এলাকা।
কলকাতার পার্ক সার্কাস, ঢাকুরিয়া, বালিগঞ্জ, আলিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় জল জমেছে। জলমগ্ন পার্ক স্ট্রিট থেকে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ। লেক মার্কেট, সল্টলেক, লেকটাউনে গাছ উপড়ে পড়ায় অবরুদ্ধ রাস্তাঘাট। রুবির কাছে গাছ ভেঙে পড়ার ছবিও সামনে এসেছে। এছাড়াও কলকাতার বহু জায়গায় এমনই ছবি ধরা পড়েছে। রবিবার রাত ১১.৩০ মিনিট থেকে ১২ টার মধ্যে আছড়ে পড়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় রেমাল। বাংলাদেশের খেপুপাড়া এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ উপকূলের কাছে আছড়ে পড়ে এই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। রবিবারের রাত ১১টার পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের উপকূল ও উপকূল সংলগ্ন অঞ্চলগুলিতে ঝড়ের সাথে সাথে বৃষ্টির প্রভাবও বাড়তে থাকে। কলকাতাতেই বৃষ্টি হয়েছে ১৪৪ মিলিমিটার।
এন্টালিতে কার্নিশের চাঙড় ভেঙে মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির। কলকাতা পুরসভার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, দ্রুততার সাথে কাজ চালানো হচ্ছে। পাম্পের সাহায্যে জল সরানো হচ্ছে। ভেঙে পড়া গাছও কাটার দিয়ে কাটা হচ্ছে।
ট্রেনের পাশাপাশি ঝড়ের প্রভাব পড়ে মেট্রো স্টেশনেও। পার্ক স্ট্রীট মেট্রো স্টেশনের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে জল ঢুকে যায়। সেখানে মানুষের সাহায্যেই জল তোলার কাজ শুরু হয়। গিরিশ পার্ক থেকে টালিগঞ্জ পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ। সেই কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। বকখালি, ঝড়খালি, ক্যানিং সহ দক্ষিণের বিভিন্ন এলাকা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চাষের জমিতে নোনাজল ঢুকেছে। একাধিক বাড়িও ভেঙে পড়ার খবর সামনে আসছে।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, কলকাতা থেকে ক্রমশ উত্তর-পূর্ব দিকে এগোচ্ছে রেমাল। দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, কলকাতা ও হুগলীতে ৫০-৬০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। সাথে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ বিকেলে ৪টে থেকে ৫টার মধ্যে রেমাল বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হবে। তারপর থেকে কলকাতা সহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে আবহাওয়ার উন্নতি হবে। উত্তরবঙ্গে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। নদিয়া, মুর্শিদাবাদে ভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা রয়েছে। অতিভারী বৃষ্টি সম্ভাবনা রয়েছে কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায়। হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান ও বীরভূম জেলায় অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। সোমবার বিকেল পর্যন্ত জেলায় জেলায় দুর্যোগের পূর্বাভাস রয়েছে।