ভোটের ময়দানে ফের নিজের বেলাগাম মন্তব্যকে অস্ত্র করেছেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর পিতৃপরিচয় নিয়ে আপত্তিজনক মন্তব্য করে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন। তাঁর সেই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতায় বিজেপি প্রার্থীকে তুলোধোনা করে নির্বাচন কমিশনের (ECI) দ্বারস্থ হচ্ছে তৃণমূল। সূত্রের খবর, বুধবার বেলা ১১টায় তৃণমূলের দশ সদস্যের প্রতিনিধি দল যাবে কমিশনে। দিলীপ ঘোষকে একযোগে আক্রমণ করেছেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা, কুণাল ঘোষ, কীর্তি আজাদরা। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের কুরুচিকর মন্তব্যের অভিযোগ সম্পর্কে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট তলব করল নির্বাচন কমিশন।
বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ মঙ্গলবার শহরে দুর্গাপুরে চতুরঙ্গ মাঠ থেকে অম্বুজা এলাকায় স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে প্রাতর্ভ্রমণে বার হয়েছিলেন। সেখানে তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বী সম্পর্কে বলেন, ‘‘তৃণমূলের প্রার্থী কীর্তি আজাদ দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। ক্রিকেটার হিসেবে সেই বিষয়ে তাঁকে আমি সম্মান করি। কিন্তু এটা রাজনীতি। আর উনি দিদির হাত ধরে এসেছেন। সেই দিদির পা-ই টলছে। এখন তাঁর বাড়ির লোক তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। বাংলার লোক কখন ধাক্কা মেরে ফেলে দেবেন উনি বুঝতেই পারবেন না।’’ এরপরেই দিলীপ বলেন, ”উনি গোয়ায় গিয়ে বলেন, ‘আমি গোয়ার মেয়ে’। ত্রিপুরায় গিয়ে বলেন, আমি ‘ত্রিপুরার মেয়ে’। আরে বাপ তো আগে ঠিক করুন। যার তার মেয়ে হওয়া ঠিক নয়।” তাঁর এই মন্তব্যে স্বভাবতই তৃণমূলের অন্দরে ক্ষোভ জমতে বেশি সময় নেয়নি।
এনিয়ে রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, ”ওঁর নিজের দল ওঁকে মেদিনীপুর থেকে ঘাড়ধাক্কা, গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে। তাই মানসিক হতাশায় উনি এখন মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করতে নেমেছেন। আরে আপনার দলই তো আপনাকে অপমান করে। আপনি তাই মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করছেন। আপনাদের জন্য লজ্জা হয়।” রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজার বক্তব্য, ”এটা বিজেপির ডিএনএ। তাঁরা বরাবর মহিলা বিরোধী মন্তব্য করেন। এতেই স্পষ্ট তাঁদের মানসিকতা। বাংলার মানুষ আপনাদের জবাব দেবে।” সুর চড়ান সায়নী ঘোষও। যাদবপুরের তৃণমূল প্রার্থী ভিডিও বার্তায় বলে দেন, দিলীপ ঘোষ যেভাবে বাংলার মা-বোনেদের অপমান করেছেন, তাতে বাংলার মানুষের হৃদয়ের দরজা তাঁর জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
অন্যদিকে, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) সূত্রে খবর, জেলাশাসকের কাছ থেকে ওই বিষয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। রিপোর্ট এলে তা দিল্লিতে কমিশনের দফতরে পাঠানো হবে। কমিশন খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত জানাবে।